দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ভারত ও চীনের কূটনীতিবিদদের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা নিরসনের জন্য ফের এক রাউন্ড আলোচনা হয়েছে বুধবার। কিন্তু ফলাফল সেই একি যায়গায় দাঁড়িয়ে। তবে সপ্তাহক্ষানেক আগের সামরিক স্তরের বৈঠকে সীমান্তে পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার যে কথা হয়, সেটা রক্ষা করতে দুই পক্ষ অঙ্গীকারবদ্ধ বলে সূত্র মারফত খবর।
সূত্রের খবর অনুযায়ী বুধবার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে Working Mechanism for Consultation and Coordination (WMCC) বৈঠকে দুই পক্ষের মধ্যে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে খোলাখুলি ও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। উল্লেখ্য, কূটনৈতিক স্তরে দুই দেশের শেষ বৈঠক ছিল আগস্টের ২০ তারিখ।
অন্যদিকে গত ২১’শে সেপ্টেম্বরে সামরিক স্তরে যে আলোচনা হয়েছে, সেটি নিয়ে এদিনের বৈঠকে পুনরায় পর্যালোচনা হয় বলে জানিয়েছে দুই পক্ষ। গত ২১ তারিখের বৈঠকে সিনিয়র কম্যান্ডাররা সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার জন্য যেসব পদক্ষেপের কথা বলেছেন, এদিনের বৈঠকে সেগুলিকেই মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি তৃণমূল স্তরে যারা নেতৃত্বে রয়েছেন, তাদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার গুরুত্বের কথাও আলোচনা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সামরিক বৈঠকে ঠিক হয়েছে যে LAC তে অতিরিক্ত সেনা সামনে পাঠাবে না দুই পক্ষর কেউই এবং সেই সাথে একতরফা ভাবেও কোনো জায়গা দখল করবে না কেউ, আর এই দুই বিষয়েই ঐকমত্য হয় যুযুধান দুই প্রতিবেশী দেশ।
সেনা সূত্রে খবর, দুই পক্ষই নিশ্চিত করতে এই বিষয়ে জোর দেয় যে, ফের যেন কোনো ঝামেলা শুরু না হয় সীমান্তে। প্রসঙ্গত, প্রায় চার দশক বাদে ১৫’ই জুন গালওয়ান সংঘর্ষের পর এই মাসের শুরুতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় গুলিও চলেছে। এমনকি দুপক্ষই সীমান্তের দুইপারে প্রায় ৫০ হাজার সেনা জমায়েত করে রেখেছে যারা লাদাখের প্রাণ কাড়া শীতেও সেখানে বহাল থাকবে।
অন্যদিকে চিনের বিদেশমন্ত্রকের তরফ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে যে মস্কোয় দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীরা যে পাঁচটি বিষয়ে সহমত হয়েছিল, সেই বিষয়গুলি নিয়েই এদিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সীমান্তে পরিস্থিতি ঠান্ডা করার উদ্দেশ্যেই এই বৈঠক, জানিয়েছে বেজিং।
যাতে দুই পক্ষের সেনা একে অপরের সামনে থেকে দূরে চলে যায় সে এবং দ্রুত যাতে সামরিক স্তরে ফের বৈঠক হয় সেই নিয়েও এদিনের বৈঠকে একমত হয় ভারত-চীন। উল্লেখ্য, লাদাখে সমস্যা শুরু হওয়ার পর এই নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সাতবার কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা হল ।
যদিও চলতি সপ্তাহেই চীন দাবি করে যে তারা ১৯৫৯ সালের এলএসি (LAC) মেনে চলছে। যদিও সেই দাবি খারিজ করে ভারত বলেছে তারা কখনোই চীনের দ্বারা একতরফা ভাবে নির্মিত এলএসি (LAC) মানে নি ও সেটা ইউএন ও জানে। অন্যদিকে জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে লাদাখকে কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল করাকে চীন স্বীকৃতি দেয় নি বলে জানায় বেজিং। সব মিলিয়ে সুত্রে’র খবর দুই দেশের মধ্যে বিভেদ কমছে কাহাতে কলমে কিন্তু মূল অশান্তি এখনো জিইয়েই আছে। এখন শুধু অশান্তি এড়ানোর চেষ্টা দেখানো হচ্ছে কিন্তু সেনারা ভেতরে ভেতরে ফুঁসছে।