দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দেশজুড়ে কোভিড আতঙ্কে অপরিকল্পিত লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পণ্য পরিবহন সহ পণ্য মজুদ করণ। আর এই রোগকে ঠেকাতে বা আগাম শরীরকে লড়াইয়ের জন্যে প্রস্তুত করতে ভরপুর প্রোটিন জাতীয় খাবার খেতে বলছেন চিকিৎসকরা। যাতে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা সঠিকভাবে বাড়তে পারে। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মাংসের দাম আগেই বেড়েছিল এবার আবার কলকাতায় ডিমের দাম ৭ টাকা/ পিস হয়ে গেল! যা একদিন ৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল। এই মূহুর্তে সবজি সহ আলুর দাম নাগালের বাইরে এমত পরিস্থিতিতে সহজলভ্য ও সস্তা প্রোটিনের দামও যদি এভাবে বাড়ে তাহলে সাধারণ মধ্যবিত্ত কী খাবে?
কেন বাড়ছে ডিমের দাম, এই প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, একাধিক কারণে ডিমের দাম বেড়েছে। করোনার জেরে লকডাউনে এমনিতেই মার খেয়েছিল হ্যাচারিগুলি। এখন বাজারে চাহিদা বাড়লেও জোগানে টান পড়েছে। এই সুযোগে ফড়েদের ভূমিকাকেই দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। আর সরকারী উদাসীনতাও একটা বড় কারণ বলেই মনে করছেন সকলে।
কদিন আগেও বাজারে প্রতি জোড়া ডিমের দাম ছিল ১০ টাকা, সেটা এই সপ্তাহের শুরুতে বেড়ে হয়েছিল ১২ টাকা জোড়া। এখন একটা ডিমের দামই ১০ ছুঁইছুঁই করছে। তাহলে ডিমের দাম কী এমনই উর্দ্ধগামী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছে, উৎসব সামনে ডিমের যোগান বাড়াতে গেলে লোকের হাতে ডিম যত কম যাবে তত রেস্টুরেন্ট বা অস্থায়ী ভেন্ডর দের কাছে বিক্রি করা যাবে। তাই দুর্গা পূজা গেলে পড়ে ডিমের দাম নামতে পারে। তবে দীপাবলির আগে পর্যন্ত দাম ৭ টাকা বা তার বেশিও হতে পারে। এরপরে শীতকাল এবং বড়দিনকে সামনে রেখে কেক তৈরির জন্য ডিমের চাহিদাও তুঙ্গে উঠবে। বলা যায় সামনের একটানা মরশুমের পুরোটাই ডিম নির্ভর।
ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি হ্যাচারিগুলির অভিযোগ, খুচরো বাজারে সরকারী নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ফড়েরা ব্যাপক আকারে লাভবান হচ্ছে। ডিম পিছু ৫.১০ টাকায় পাইকারি দরে ডিম বিক্রি করলেও ফড়েদের পাল্লায় পড়ে তা ক্রেতার হাতে পৌঁছচ্ছে ৭ টাকায়। খুচরো বিক্রেতারা যদি প্রতিটা ডিমে ৫০–৭৫ পয়সার লাভ রাখেন, তাহলেও দাম কখনও ৭ টাকায় পৌঁছনো সম্ভব নয়।
সূত্রের খবর, আমাদের বাংলাতে রোজ প্রায় ২.৮ কোটি ডিমের প্রয়োজন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের উৎপাদনক্ষমতা মাত্র ৮০ লক্ষ। আমফানের পর এই উৎপাদনের পরিমাণ আরও কমেছে। তাই ডিমের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানার উপর নির্ভর করতে হয়। আর সেখান থেকে করোনা বিধিনিষেধ মেনে ডিম ঢুকতেও সময় লাগছে অনেক বেশি, তাই মজুদের পরিমাণ কম হওয়াতে দামও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।