ফলে বাংলার কথা ভেবে উত্তরপ্রদেশের সরকার সিদ্ধান্ত নেবেনা। আগে ইউ পি পরে বাংলা, যে যার রাজ্য সামলা। এটাই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা কার্যত বলে দিয়েছেন বাংলার বাবুদের। দিলীপবাবু দিল্লির মৌসম বুঝে চলেন। তাছাড়া তিনি সংঘের সন্তান। কিন্তু তৃণমূল থেকে আসা বাবুদের বার বার টিউন করতে হয়। সুতরাং দিল্লির নির্দেশ কায়েম করেন যাঁরা, যেমন শিবপ্রকাশ , মেনন অথবা কৈলাস, তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের সরকারকে ঘায়েল করতে রাস্তায় নামতে হবে। দিল্লি-লখনউয়ের দিকে তাকিয়ে রাজনীতি করলে চলবে না । একেক রাজ্যে একেক ইস্যু। বিহারের ভোট সামনে। ওখানে রাজপুত তাস খেলে উচ্চবর্ণের ভোট সংহত করতে হবে। কারণ নিম্নবর্ণের ভোটের ভাগীদার বেশি। উল্টোদিকে বিজেপি একাই। এই অঙ্কে শুধু বিরোধী লালু – কংগ্রেস জোট নয় , শাসক মোর্চার নেতা নীতীশকেও নাকচ করা যায়। বিজেপি অনেকটা বেশি আসন পেলে মুখ্যমন্ত্রী করা যাবে কোনও উচ্চবর্ণের নেতাকে। সঙ্গে নুনের কাজ করবেন নীতীশ, রামবিলাস আর অতি দলিত নেতার জিতন রাম মাঝি কিছু ভোট। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে হলে উচ্চবর্ণের তাস ছাড়া চলবেনা।
তাই পাশের রাজ্য ও বৃহত্তম প্রদেশের ঠাকুরনেতা যোগীর উত্থান বিজেপির আসল অঙ্ক মিলিয়ে দেবে বলে গেরুয়া ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেলরা নির্দেশ দিয়েছেন। তাই ১৯ বছরের দলিত মেয়ের ধর্ষক আর জিভ কাটাদের গর্দান নেওয়ার গল্প দিয়ে জাতপাতের মেরুকরণ দাঁড়াবে মোক্ষম। ওতেই যোগীরাজের মোক্ষলাভ। এদিকে মণীষার দেহটা ছিন্নভিন্ন করেছে যারা বলে আম জনতার অভিযোগ, তারা অভিযুক্তদের ছেড়ে দিয়ে মৃতা মেয়ের পরিবারের সবার নামে এফআইআর করার দাবিতে পথে নেমেছে তথাকথিত ঠাকুরের দল। বিজেপির পূর্বতন বিধায়ক রাজবীর সিং পহেলওয়ানের নেতৃত্বে তাদের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে হাথরসে। ব্যাপারটা এতটাই দৃষ্টিকটূ যে তারা সিবিআই তদন্তের সিদ্ধান্ত ও যোগীকে ধন্য ধন্য করেছে। মুখ্যমন্ত্রীকে এই হেনস্তা থেকে বাঁচাতে এসপি রাজবীর সহ ১০০ জন অজানা লোকের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু গ্রেফতার করা হয়নি।
অন্যদিকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশ উত্তরপ্রদেশ থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে মণীশ শুক্লা খুনের পড়ে পাওয়া চোদ্দ আনা নিয়ে সরব হতে। এবং যেভাবে বৃহস্পতিবারের প্রতিরোধ ও প্রচার জুটেছে প্রশাসন আর মিডিয়া মারফত, তাতে কেন্দ্রীয় নেতারা আশার কথা শুনিয়েছেন দিল্লির বসদের। কিন্তু ভবি ভুলবার নন সুপার বস। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইদানিং বেশি চাপ নিতে না দিলেও তাপ উত্তাপ কোথায় কতটা বহাল তার হাল জানাচ্ছেন শাহই। আর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা যতক্ষণ না পার্টির প্রবচনে সায় দিচ্ছেন ততক্ষণ সুপার বস সন্তুষ্ট নন। রাজ্যের নেতাদের তীব্র চাপে থাকতে হবে। এর নানা পদ্ধতি আছে। সবে ঠাকুর ঠাকুর করে একটা ইস্যু এসেছে। নিহত ব্রাহ্মণ মণীশ আর নেতা ঠাকুর অর্জুন সিং। মামলায় কী যায় আসে? অর্জুনের গর্জন শোনা যাচ্ছে মিডিয়ায়। গোলাপকে যে নামেই ডাকো। সেতো আদপে গোলাপ। বাংলায় জাতপাত খায়না। কিন্তু পেশিশক্তি তো খায়। সুতরাং ব্যারাকপুরে বল ঘুরছে। কার কোর্টে ? মালুম হবে অন্য মেরুকরণের ভোটে।