দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: যদিও এখনও কোনও করোনাভাইরাস টিকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অফিশিয়ালভাবে এসে পৌঁছায়নি। তবে দেশ জুড়ে টিকা বণ্টনের প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না কেন্দ্র। ওই জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দ্রুত টিকা বণ্টনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একাজের জন্যে নির্বাচন ও বিপর্যয় মোকাবিলার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর পরামর্শও দিলেন প্রধানমন্ত্রী।
শনিবার করোনা টিকার বণ্টন এবং মজুতের মতো বিষয়ের প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক করেন মোদী। বৈঠকে হাজির ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন, নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য), বিজ্ঞানী-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশের ভৌগোলিক আয়তন এবং বৈচিত্রের বিষয়টি মাথায় রেখে দ্রুত টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’ একইসঙ্গে কোল্ড স্টোরেজ, কীভাবে টিকা বণ্টন করা হবে, নজরদারি প্রক্রিয়া, টিকা প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের মতো প্রতিটি বিষয়ের নিখুঁত ব্লূপ্রিন্ট তৈরিতে প্রস্তুতিও সেরে রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন মোদী।
আজ এই বৈঠকে কীভাবে দেশ ব্যাপী সেই বড়সড় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে, তাও ব্যাখ্যা করেন মোদী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘দেশে সফলভাবে নির্বাচন আয়োজন এবং বিপর্যয় মোকাবিলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, একইভাবে টিকার বণ্টন ও প্রশাসনিক কাঠামো তৈরি রাখতে হবে।’ পুরো বণ্টন প্রক্রিয়ায় প্রশাসনের সর্বনিম্ন স্তর থেকে শুরু করে আমজনতা, স্বেচ্ছাসেবক, বিশেষজ্ঞ-সহ সমাজের সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাজ্য / ইউটিএস / জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক, নাগরিক এবং সকল প্রয়োজনীয় ডোমেইন থেকে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণ। পুরো প্রক্রিয়াটির একটি শক্তিশালী আইটি মেরুদণ্ড থাকা উচিত এবং এই ব্যবস্থাকে এমনভাবে ডিজাইন করা উচিত যাতে আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার একটি দীর্ঘস্থায়ী মূল্য থাকতে পারে। সেইসঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় দীর্ঘকালীন প্রভাবের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির মজবুত ভিত্তি গড়ে তুলতে বলেছেন।
শুধু দেশে নয় এর পাশাপাশি বিদেশেও করোনা টিকা পাঠানোর কথা বলেছেন মোদী। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বকে সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে শুধুমাত্র প্রতিবেশি দেশের ক্ষেত্রেই আটকে থাকলে হবে না, সারা বিশ্বের কাছে টিকা, ওষুধ এবং টিকা বণ্টনের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মের সুবিধা প্রদানও করতে হবে আমাদের।’
আইসিএমআর এবং ডি/ও বায়ো টেকনোলজি (ডিবিটি) দ্বারা পরিচালিত ভারতে সার্স্কোভি-২ (কোভিড-১৯ ভাইরাস) জিনোমের উপর দুটি প্যান ইন্ডিয়া গবেষণা পরামর্শ দেয় যে এই ভাইরাস জেনেটিক্যালি স্থিতিশীল এবং এই ভাইরাসে কোন বড় মিউটেশন নেই।
প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, এই মহামারী প্রতিরোধে আত্মতুষ্টির বিরুদ্ধে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি ক্রমাগত সামাজিক পার্থক্য, কোভিড যথাযথ আচরণ যেমন মুখোশ পরা, নিয়মিত হাত ধোয়া এবং স্যানিটেশন ইত্যাদি, বিশেষ করে আসন্ন উৎসবের মৌসুমের প্রেক্ষাপটে জোর দেন।
উল্লেখ্য এর আগে করোনা মহামারীর প্রাক্কালে বিশ্বব্যাপী হাইড্রক্সিক্লোরকুইন ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে মোদী নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করে বিশ্বব্যাপী প্রশংসার পাত্র হয়েছেন। এবার তার নেতৃত্বে বিশ্বের সর্ব বৃহত্ গণতান্ত্রিক দেশে কিভাবে করোনার টিকা বন্টন হয় সেটা দেখাই এখন সময়ের অপেক্ষা।