দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বৈশ্বিক অতিমারি ছিনিয়ে নিয়েছে জীবন, মেলামেশার স্বাধীনতা, আয়ের উপায় সহ একগুচ্ছ স্বাধীনতা। গৃহবন্দী মানুষের জীবনে এখন সরকারী বিধিনিষেধের ঘেরাটোপ আর শয়নে স্বপনে একটাই চিন্তা, কবে আসবে ‘টিকা’ কবে পাব ‘মুক্তি’। আর এই নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পায়নি বাংলার শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গাপূজাও। যদিও শুধু বাংলা নয়, দেশ কাল পেরিয়ে প্রবাসেও দুর্গাপুজোর যথেষ্ট উন্মাদনা রয়েছে। কিন্তু ২০২০ টা এবার অনেকটাই অন্যরকম। এবার অধিকাংশ প্রবাসেই ছার মেলেনি দুর্গাপুজো করার। যেমনটি বাধার সম্মুক্ষিণ হয়েছেন সল্টলেকের আদি বাসিন্দা বর্তমানে কানাডা প্রবাসী তৃষা কুণ্ডু।


তৃষা সল্টলেকের বি জে ব্লকে থাকতো। আর পাঁচটা বাঙালি মেয়ের মতই দুর্গাপুজোর সাথে তাঁর নাড়ির সম্পর্ক। তৃষা এই মূহুর্তে থাকে ব্রম্পটন সিটি, কানাডাতে। সেখানেই স্বামী জসপ্রীত সিং এর সাথে ‘টু স্টেটস’ সংসার। প্রবাসে প্রতিবারই অংশগ্রহণ করতো কমিউনিটি দুর্গাপুজোতে, কিন্তু এই বছর ১০ জনের বেশি জমায়েতে সরকারী নিষেধাজ্ঞা থাকায়, প্রকাশ্যে দুর্গাপূজা করায় মেলেনি ছার। ফলত:ই মন কেমন করা শরত্ উত্সবে সামিল হতে না পেরে বঙ্গ-মনে জমছিল মেঘ। কিন্তু তৃষাও দমবার পাত্রী নন। মা সার্বজনীন না হলেও একান্ত নিজের হতে তো ক্ষতি নেই!
দেবী দুর্গার ছবি ফ্রেমে পুজো রয়েছে পদ্ম ও দর্পণ সমস্ত নিয়ম মেনেই হচ্ছে পুজো তৃষা ও সমীর বাবু
যেমন ভাবনা তেমন কাজ। নিজের ঘরেই ‘মা দুর্গা’র গৃহপ্রবেশ করালেন তৃষা। ফ্রেমে বাধাই করা দুর্গা কে আচার আচরণ মেনে পূজা করলেন। আর অবাক হবেন এই জেনে যে এই পুজো যিনি করেছেন, সেই পুরোহিতের ভূমিকাতে ছিলেন সমীর ব্যানার্জী যিনি ওই শহরের একটি কলেজের ডিন (dean)।
দেবী দুর্গা কে নিজের ঘরে পুজো করতে পেরে উচ্ছসিত তৃষা। দেশ ছেড়ে, নিজের কলকাতা ছেড়ে এতটা দূরে এমনিতেই মাঝে মাঝে মন কেঁদে ওঠে। সেখানে দুর্গা পুজো না হওয়া টা মেনেই নিতে পারছিলেন না তিনি। তৃষা’র এই উপস্থিত বুদ্ধিকে সমর্থন করার জন্যে স্বামী জসপ্রীত ও ডিন সমীর বাবুকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃষা। সেই সাথে ‘মায়ের গৃহপ্রবেশ’ এক অন্যরকম অনুভুতি, যেন একটুকরো কলকাতা এবার তার ঘরেই রয়েছে। ফোনে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানালেন, সেই সাথে এই অভিজ্ঞতাও শেয়ার করলেন।