দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: এই ভারত মনমোহন সিং এর ভারত নয়! এ ভারত ঘরে ঢুকে হামলা চালাতে পারে, এই আশঙ্কাতেই ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ছেড়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। পাক সংসদে এমনই চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা সর্দার আয়াজ সাদিক। পাকিস্তান ভারতকে যে কতটা ভয় পায় তা খোদ পাক সাংসদের এই স্বীকারোক্তিতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এয়ারস্ট্রাইক করে। একাধিক জঙ্গি ডেরা গুঁড়িয়ে দয় ভারতীয় বায়ুসেনা। অতর্কিতে চালানো ওই হামলায় বহু জঙ্গি নিহত হয়। তবে তাদের ভূখণ্ডে জঙ্গি ডেরা থাকার কথা অস্বীকার করে পাকিস্তান। বালাকোটে ভারতের এয়ারস্ট্রাইকের ঠিক পরের দিনই আকাশপথে ভারতে হামলার চেষ্টা চালায় পাকিস্তান।
পাকিস্তানকেও মোক্ষম জবাব দেয় ভারত। মিগ বিমান নিয়ে ধাওয়া করে পাক এফ-১৬ বিমান গুলি করে নামান ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। কিন্তু পাক বিমানকে ধাওয়া করতে গিয়ে পাকিস্তানের সীমান্ত পেরিয়ে চলে যান অভিনন্দন। সেখানে তাঁর বিমান ক্ষতিগ্রস্ত হলে পরে ভারতীয় বায়ুসেনার এই অফিসারকে আটক করে পাকিস্তানের সেনা ও সাধারণ নাগরিক। অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করা ও তার ওপর শারীরিক অত্যাচার করা নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় দুই দেশেই। পাকিস্তানকে কূটনৈতিকভাবে প্রবল চাপ দিতে শুরু করে ভারত।




গতকাল প্রকাশ্যে এসেছে সেই ঘটনার নেপথ্যে পাকিস্থানের মন্ত্রকে ঘটে যাওয়া ঘটনার কথা। পাক সংসদে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা সর্দার আয়াজ সাদিক জানিয়েছেন, সেই সময় পাক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার ঘোর অস্বস্তিতে পড়েছিলেন। জানা গিয়েছে অভিনন্দন বর্তমান আটক হতেই কার্যত ঘুম উড়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের। এমনকী পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশিও ভয়ে কাঁপছিলেন। অভিনন্দন বর্তমানকে আটক করে রীতিমতো বিপাকে পড়েছিল পাকিস্তান, সংসদে ইমরান খানের সরকারের অস্বস্তি বাড়িয়ে এমনই মন্তব্য করেন ওই বিরোধী নেতা।
ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান পাকিস্তানে আটক হতেই জরুরি বৈঠকে বসে ইমরান খানের প্রশাসন। সেই বৈঠকে পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি, পাক সেনাপ্রধান বাজওয়া ছাড়াও বিরোধীদের তরফে বৈঠকে ছিলেন পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা সর্দার আয়াজ সাদিক। তবে সেই বৈঠক এড়িয়ে যান পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সংসদে দাঁড়িয়েই সেদিনের সেই বৈঠক প্রসঙ্গে পাকিস্তান মুসলিম লিগের নেতা সর্দার আয়াজ সাদিক বলেন, ”অভিনন্দন বর্তমানকে নিয়ে সেদিনের বৈঠকে কথা হচ্ছিল। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আসেননি। সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতেই বৈঠকে বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেছিলেন, অভিনন্দনকে ছাড়তেই হবে। তা না হলে রাত ৯টার মধ্যেই পাকিস্তানে হামলা চালাবে ভারত। আর একথা বলার সময়ে তিনি কাঁপছিলেন বার বার ঘাম মুছছিলেন।”
খুব স্বাভাবিকভাবেই ইমরান খান শাহ মেহমুদ কুরেশি’র বক্তব্যে দেশ বিদেশ জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সোসাল মিডিয়াতে ট্রোল ও পাকিস্তান। অনেক বিশেষজ্ঞই বলছেন পাকিস্তানের মানুষ আর ইমরান খানের এই সরকার কে চাইছেন না যে কারণে সংসদের মধ্যেও সেই বিরোধিতার ছবি বার বার উঠে আসছে।