দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: জাতীয় এবং শিল্পক্ষেত্রে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবারে নিজেদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, সুরক্ষিত দেশীয় উত্পাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন। পুরনো রপ্তানি-নির্ভর অর্থনৈতিক মডেলের উপর ভরসা করলে আর চলবে না। এবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র মতই ‘আত্মনির্ভর’ হওয়ার ডাক দিলেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
সূত্রের খবর সম্প্রতি কমিউনিস্ট পার্টির অধিবেশন ডেকেছিলেন চীনা প্রেসিডেন্ট। সেই অধিবেশনেই চতুর্দশতম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার প্রস্তাব পেশ করেন তিনি। দীর্ঘমেয়াদি ‘ভিশন ২০৩৫’-এর পরিকল্পনা অনুযায়ী, ক্রমশ সঙ্কুচিত হতে থাকা রপ্তানি বাজারের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে এনে দেশীয় বাজারে চাহিদা বৃদ্ধিই মূল লক্ষ্য।
চীনের এই পদক্ষেপ নিয়ে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের দাবি, ‘ভিশন ২০৩৫’-এর পরিকল্পনাকে সামনে রেখে চীনা প্রেসিডেন্ট বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, আরও বছর ১৫ ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন তিনি। বছর দু’য়েক আগেই সংবিধান সংশোধনী এনে পথের কাঁটা সরিয়েছেন জিনপিং। এখন আর দশ বছর নয়, পুনরায় নির্বাচিত হতে থাকলে আজীবন প্রেসিডেন্ট পদে থাকার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে তাঁর।
কিউসি নামে একটি চীনা সংবাদমাধ্যমে জিনপিং বলেন, “পুরনো অর্থনৈতিক মডেল ধরে এগোলে আর চলবে না। লক্ষ্য সার্বিক উন্নয়ন এবং জোগান ব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার। দেশীয় শিল্প কাঠামোকে নতুন রূপ দিতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং বিকল্প পণ্যের আমদানি বাড়ানো প্রয়োজন।”
বিশেষজ্ঞদের মতে চীন অতিমারীর সঙ্কটে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের ফাঁকফোকরগুলো আরও প্রকট ভাবে ধরতে পেরেছে। একটা জোগান ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে যাতে আরেকটা বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি থাকে, সেই লক্ষ্যেই কিছু জরুরি পণ্যের সরবরাহের জন্য বিকল্প উত্সের খোঁজ করছেন শি জিনপিং। আর সেই উদ্দেশ্যেই দেশের শিল্প গুলোকে ‘আত্ম নির্ভর’ হওয়ার ডাক দিচ্ছেন। তাহলে কী চীন বিশ্বের অন্যদেশ গুলোর ‘তফাতে থাকো’ নীতির চাপে নতি স্বীকার করছে? সে উত্তর সময়ই দেবে। তবে ভারতের মতো বিশ্বের অনেক দেশই চীন থেকে আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়াতে বেজিং এ চাপে আছে তা তাদের এই নতুন পরিকল্পনাতেই প্রকাশ্য।