দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: হুই মুসলিম অধ্যুষিত চীনের নিংজিয়া হুই অটনোমাস রিজিয়নের রাজধানী ইনচুয়ান শহরে রয়েছে নানগুয়ান মসজিদ। এবার মিং আমলের এই বিখ্যাত মসজিদের মিনার ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল চীনের শি জিনপিং এর সরকার। এমনকি মসজিদটির গায়ে খোদাই সমস্ত আরবি হরফ মুছে সেখানে চীনা ভাষায় নতুন বার্তা লেখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই মসজিদটি তৈরি হয় ১৩৬৮ থেকে ১৬৪৪ পর্যন্ত চীন শাসন করা মিং রাজবংশের আমলে। চীনা মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত পবিত্র ওই মসজিদটি একাধিক সোনালি মিনার ও গম্বুজে সজ্জিত ছিল। যা ইসলামি স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শনও বটে। ১৯৮১ সালে ওই ধর্মস্থানটির কাঠামোর পুনুরুদ্ধার করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি মসজিদটির প্রকাশ্যে আসা একাধিক ছবিতে দেখা গিয়েছে মসজিদের কোনো লক্ষণ বা চিহ্নই নেই সেখানে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঐতিহাসিক ও শিল্প সমৃদ্ধ মিনার ও গম্বুজগুলি। মসজিদটির গায়ে খোদাই সমস্ত আরবি হরফ মুছে সেখানে মান্দারিন চীনা ভাষায় নতুন বার্তা লেখা হয়েছে। কার্যত ইসলামের চিহ্ন মুছে দেওয়া হয়েছে ওই পুরাতন কাঠামো থেকে।
সূত্রের খবর, সম্প্রতি ইনচুয়ান শহর পরিদর্শনে আসেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সফর শেষে নিংজিয়া প্রদেশে ইসলামের ‘শুদ্ধিকরণ’ প্রক্রিয়ায় গাফিলতির অভিযোগে একাধিক সরকারি আধিকারিক জিনপিংয়ের রোষের মুখে পড়েন। তারপরই বিখ্যাত নানগুয়ান মসজিদের ভোল পালটে ফেলে প্রশাসন।
নানগুয়ান মসজিদ যা ছিল নানগুয়ান মসজিদ এখন যা হয়েছে
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (ASPI)-এর রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, শিনজিয়াং প্রদেশের ১০ লক্ষ উইঘুর মুসলিমকে ধর্মত্যাগ করানোর পাশাপাশি ১৬ হাজার মসজিদ ভেঙে ফেলছে চীন। উপগ্রহ চিত্র থেকে পাওয়া চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের ছবি বিশ্লেষণ করে ওই সংস্থাটি উল্লেখ করেছে, আগে শিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় ২৪ হাজার মসজিদ ছিল। কিন্তু, ২০১৭ সাল থেকে গত তিন বছরের তার মধ্যে ১৬ হাজার মসজিদ ধ্বংস করে ফেলেছে চীন। কিছু মসজিদ পুরোপুরি ধ্বংস না করা হলেও নামাজ পড়ার উপযুক্ত নয় সেই মসজিদ গুলি।প্রসঙ্গত, চীনে মুসলিমদের উপর অত্যাচার এখন আর বিশ্বের অজানা নয়। ‘মৌলবাদ’ দমনের নামে উইঘুরদের উপর চলা নির্যাতনও সর্বজনবিদিত।
যেখানে ব্যঙ্গচিত্র দেখানোর জন্যে ফ্রান্সে একের পর এক ‘মৌলবাদী’ হানা চলছে, সাধারণের নৃশংশভাবে প্রাণহানি করা হচ্ছে সেখানে চীনের এই আগ্রাসী নীতি নিয়ে অদ্ভুত ভাবে কুলুপ এঁটেছেন ইসলামিক বিশ্ব। অনেক বিশেষজ্ঞর ধারণা চীন যেভাবে ইসলামিক দেশ গুলিকে লোন দেয় সেই যায়গা থেকে চীনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পায় পাকিস্তান, তুর্কি সহ মধ্য প্রাচ্যের অধিকাংশ ইসলামিক দেশ।