দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অবশেষে সামনে এল মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ফলাফল। গণনা শুরু হওয়ার চার দিনের মাথায় সামনে এল কে হবেন রাষ্ট্রপতি। আজ ভারতীয় সময় রাত ১০ টা নাগাদ অজানা গেল বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পর্যদুস্ত করে জিতলেন ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেন। পেনসেলভেনিয়ার ২০ ইলেকটরাল কলেজ সিট জেতার সঙ্গে সঙ্গেই ২৭০ ম্যাজিক সংখ্যা পেরিয়ে গেলেন তিনি। এখন বাইডেনের দখলে ২৮৪ আসন। ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪। যদিও এখনো চার রাজ্যের ফলাফল আসেনি। তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিস। প্রথম এশিয়ান ও ব্ল্যাক মহিলা হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন কমলা হ্যারিস।
সূত্রের খবর বাইডেন এখনও এগিয়ে আছেন জর্জিয়া ও নেভাডায়। এই দুই রাজ্যে জিতলে তিনি ৩০৬টি ইলেকটরাল কলেজ ভোট পাবেন। ৫৩৮টি ইলেকটরাল কলেজের মধ্যে তাঁর ২৭০ দরকার ছিল। অন্যদিকে ট্রাম্প এগিয়ে নর্থ ক্যারোলিনা ও আলাস্কায়। সেখানে জিতলে তিনি ২৩২ আসন পাবেন। ট্রাম্প যদিও এই হার মেনে নেননি ও আদালতে যাওয়ার কথা বলেছেন। প্রথা অনুযায়ী, আগামী বছরের শুরুতে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বাইডেনের। তখনও যদি আইনি লড়াই না শেষ হয়, কিভাবে তিনি প্রেসিডেণ্ট পদে বসবেন সেটা এখনও অনিশ্চিত। তবে ট্রাম্প ডাক ব্যালটে কারচুপির যে অভিযোগ করছেন সেটায় বিশেষ কোনও সারবত্তা নেই বলেই মনে করেন আইনি বিশেষজ্ঞরা।
জয়ের পর বাইডেন টুইটারে লেখেন যে তিনি সবার রাষ্ট্রপতি হবেন।
অন্যদিকে ট্রাম্পের এখনও পর্যন্ত শেষ টুইট ছিল যে তিনি নির্বাচন জিতেছেন! তারপর তিনি বলেন যে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক বলছে বলেই বাইডেন যেভাবে নিজেকে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি হিসেবে দাবি করছেন, সেটা ভুল।
উলেখ্য, ৭৭ বছর বয়সী জো বাইডেন ছয় বার মার্কিন সেনেটে নির্বাচিত হয়েছেন। ছিলেন ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট। ১৯৮৮ সালে প্রথমবার রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য প্রাইমারিতে লড়েন। গতবার লড়বেন ভেবেও শেষ পর্যন্ত ছেলের মৃত্যুর ফলে পিছিয়ে আসেন তিনি। অবশেষে হল ৩০ বছরের স্বপ্ন পূর্ণ হল। তিনি কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়েছেন ডেপুটি হিসেবে। সেখানেও গড়লেন ইতিহাস। তবে যেভাবে কার্যত গত চার বছর ধরে ব্যবসায়ী থেকে আচমকা রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠা ডোনাল্ড ট্রাম্প খামখেয়ালিপনা করে চলছিলেন, তার থেকে অনেকটাই বদল আনবেন জো বাইডেন, সেটা বলাই চলে। ভারতের সঙ্গেও তাঁর দীর্ঘ সম্পর্ক রয়েছে তাই তার আমলে ভারত-মার্কিন সম্পর্কের ইতিবাচক গতিপথ অব্যাহত থাকবে বলেই আশা।
তবে উল্লেখযোগ্যভাবে সমীক্ষকরা যেভাবে ট্রাম্পকে কোনও সুযোগই দেননি, কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল অনেকটা ভালো করেছেন তিনি। কিন্তু এবার তিনি হারিয়েছেন কিছু শ্বেতাঙ্গের সমর্থন। এছাডা়ও কৃষ্ণাঙ্গ ও ল্যাটিনোদের ঢল নেমেছিল রাস্তায় ট্রাম্পকে হারাতে। রেকর্ড সংখ্যক ভোটও পড়েছিল। তবুও একপেশে হয়নি নির্বাচন। বেশ কিছু রাজ্যে রীতিমত কান ঘেঁষে বেরিয়েছেন বাইডেন। কোভিড না এলে হয়তো ট্রাম্পই জিততেন, এমনও মনে করেন অনেক বিশেষজ্ঞ। রিয়েলিটি শো-তে লোকজনকে ট্রাম্প বলতেন ইউ আর ফায়ার্ড। আজ তাঁকেই বিদায়ের পথ দেখিয়ে দিল মার্কিন জনতা। এখন আপনিও বলতে পারেন ট্রাম্প জাস্ট ‘চিল’।