দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: পাকিস্তানে বসবাসকারী ২৬/১১’র মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সৈয়দের ১০ বছরের জেল ঘোষণা করলো পাকিস্তানের আদালত। এই রায়ে ২টি সন্ত্রাসের মামলায় ১০ বছরের জেল হলো হাফিজ সৈয়দের। বৃহস্পতিবার লাহোরের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আদালত হাফিজ সৈয়দ সহ জামাত-উদ-দাওয়ার ৪ নেতাকে সাজা দিয়েছে।
যদিও পাকিস্তানের আদালতে সন্ত্রাসের মামলায় এটিই তার প্রথম সাজা নয়। লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রকাশ্য সংগঠন জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ সৈয়দ ও তার কিছু সহযোগীর সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানের মামলায় ফেব্রুয়ারিতে ১১ বছরের জন্যে জেল হয়েছিল।
হাফিজ ও তার ২ সহযোগী জাফর ইকবাল ও ইয়াহায়া মুজাহিদকে সাড়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছে, আর তার শ্যালক আবদুল রহমান মাক্কিকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। হাফিজ সৈয়দ ভারতে মোস্ট ওয়ান্টেড। সে ২০০৮এর মুম্বই হামলার মূল চক্রী। যে হামলায় ১০ জন জঙ্গি ১৬৬ জনকে খুন করেছিল ও জখম হয়েছিলেন আরো কয়েকশো। হাফিজকে বিশ্ব জঙ্গির তকমা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ ও আমেরিকা। আমেরিকা তার মাথার দাম রেখেছে ১০ মিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক চাপে পাকিস্তান গত বছর জুলাইয়ে সন্ত্রাসবাদে অর্থ যোগানের মামলায় হাফিজকে গ্রেফতার করে। তাকে রাখা হয়েছে লাহোরের কোট লাখপত জেলে। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসে অর্থ যোগানের নজরদারী সংস্থা এফএটিএফ পাকিস্তানকে চাপ দিচ্ছে সেখানে মুক্ত অবস্থা ঘুরতে থাকা ও পাকিস্তানের জমিকে ব্যবহার করে ভারতে হামলা চালানো জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে। এমনকি আইএসআই ও হাফিজ কে ভারতের বিরুদ্ধে নাশকতা চালানোর জন্যে ব্যবহার করছে।
ভারত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ও বন্ধু দেশদের দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে পাকিস্তানকে চাপ দেওয়ার জন্য যাতে তারা তাদের মাটিতে জঙ্গিদের আশ্রয় না দেয়। ভারত এফএটিএফ-কে প্রমাণ দিয়েছে কীভাবে পাকিস্তানি সংস্থাগুলি জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদকে অর্থ সাহায্য করছে। যারা ২০১৯এর ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে হামলা চালিয়েছিল।
পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী দফতর ৪১টি মামলা দায়ের করেছে জামাত-উদ-দাওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে। এখনও পর্যন্ত হাফিজের বিরুদ্ধে ৪টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। বাকিগুলি পাকিস্তান জুড়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী আদালতে বকেয়া রয়েছে।
এই মূহুর্তে পাকিস্তান এফএটিএফ-এ কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে সেইসাথে পাকিস্তান সরকারের বহু গুপ্ত কাজের হদিস ও জানে হাফিজ। হাফিজ কে বিদেশী শক্তি যাতে ধরতে না পারে সেই সাথে যাতে পাকিস্তান আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, এডিবি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে অর্থ সাহায্যের ক্ষেত্রে বিপাকে না পড়ে সেই জন্যে হাফিজকে জেলে পুড়ে সুরক্ষা দিল পাকিস্তান এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।