দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ দিল্লির কৃষক আন্দোলন নিয়ে যখন উত্তাল সারা দেশ। তখন কৃষি আইন সংক্রান্ত বিক্ষোভকে সমর্থন করে তোপ দেগেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, এখন আরো ৩৬ জন ব্রিটিশ মন্ত্রী আন্দোলনকে সমর্থন করে বিদেশ মন্ত্রককে চিঠি লিখল।উল্লেখ্য, কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে যখন সরকারের একের পর এক বৈঠক চলছে, তারই মাঝে শুক্রবার জাস্টিন ট্রুডো স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তিনি কৃষক আন্দোলনের পাশেই আছেন। এবার শনিবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টের লেবার পার্টির ৩৬ জন সদস্য ব্রিটিশ বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব’কে চিঠি লিখে দাবি করেছে যে, পার্লামেন্টে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে।
লেবার পার্টির সদস্য, তথা ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি তন্মঞ্জিৎ সিং ঢেসি চিঠিতে দাবি করেছেন, “ভারত সরকারের নতুন আইন করোনাভাইরাসের মধ্যেও কৃষকদের দেশ জোড়া আন্দোলনে ঠেলে দিয়েছে কারণ কৃষকদের শোষণ থেকে রক্ষা করতে এবং তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের ঠিক মূল্য নির্ধারণে এই ব্যর্থ।” তন্মঞ্জিৎ আরও বলেছেন, ব্রিটেনের সব শিখ এবং পাঞ্জাবের সঙ্গে যাঁদের যোগ আছে সবার জন্য এটা উদ্বেগের বিষয়।
সারা ভারতই এই আন্দোলনে সামিল। অনেক ব্রিটিশ শিখ এবং পঞ্জাবিরা তাঁদের এমপি–দের কাছে এব্যাপারে আলোচনা চেয়েছেন কারণ তাঁদের পরিজনরা এবং পঞ্জাবে তাঁদের পূর্বপুরুষদের জমি এতে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পঞ্জাবের তিন–চতুর্থাংশ কৃষিকাজে যুক্ত। তাই ভারতের নতুন কৃষি আইন পাঞ্জাবিদের অত্যন্ত অসুবিধায় ফেলবে এবং এটাকে ‘মৃত্যু পরোয়ানা’ বলে অভিযোগ করেছেন তন্মঞ্জিৎ।
রাষ্ট্রপুঞ্জও কৃষক আন্দোলনকে সমর্থন করেছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টেফআনি ডুজেরিক বলেন, “মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখানোর অধিকার আছে এবং কর্তৃপক্ষের উচিত তাদের সেটা করতে দেওয়া।”
এই প্রসঙ্গে জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছিলেন, ‘’কানাডা সারা পৃথিবী জুড়েই সমস্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পাশে আছে ও থাকবে। আমরা খুশি যে, আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে”। ট্রুডো আরও বলেছেন যে, ‘’কৃষকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে কানাডা সরকার সব সময় তাঁদের পাশে আছে’’।
অন্যদিকে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, “এই মন্তব্যে ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। এমন চলতে থাকলে দু’দেশের সম্পর্কে প্রভাব পড়তে বাধ্য”। এ ব্যাপারে অবশ্য কেন্দ্রের পাশে দাঁড়িয়েছে শিবসেনা-ও। তাদের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী-ও টুইটারে কানাডার প্রধানমন্ত্রীকে একহাত নেন। লেখেন, “আপনি বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন, জেনে ভালো লাগল। তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় অন্য কোনও দেশের রাজনীতির বস্তু হয়ে দাঁড়াতে পারে না। অন্যান্য দেশকে আমরা সব সময় যে সৌজন্য দেখিয়ে এসেছি, দয়া করে আপনিও সেটিকে সম্মান করুন”। এর পরে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বার্তা দেন, “আপনার কাছেও আর্জি, অন্যান্য রাষ্ট্র এ বিষয়ে মতামত দেওয়ার আগে সমস্যাটির সমাধান খুঁজুন”। একই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আপ বিধায়ক ও মুখপাত্র রাখব চাড্ডা।