দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ যারা আমাদের ঘরে ঘরে দুনিয়ার প্রতিটা কোণের খবর পৌঁছে দেয়, তারাই নাকি এখন জেলের এক কোণে পরে আছে মুক্তির আশায়। এক রিপোর্টে উঠে এল এইরকমেরই এক গা হিম করা তথ্য। যাকে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয় সেই ফোর্থ পিলার এখন চূড়ান্ত সংঘর্ষ চালাচ্ছে। হাথরসে যখন তরুণী সাংবাদিক প্রশ্ন তুলেছিল যে, ‘ইয়ে ক্যা জ্বাল রাহা হে?’ তখনই আরেকদিকে চলছিল খবর চাপা দেবার জঘন্য চক্রান্ত। ইয়োলো জার্নালিজম এখন যেন মেইনষ্ট্রিম জার্নালিজমের জায়গা ছিনিয়ে নিয়েছে। মিথ্যে খবরের নিচে চাপা পরে যাচ্ছে সত্য! আর সেই সত্যান্বেষীদের ধরে নিয়ে কারাগারে পুরছে সরকার।
এদিন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট থেকে জানানো হয়েছে যে রেকর্ড সংখ্যক সাংবাদিককে নাকি এবার জেলবন্দি করা হয়েছে। পয়লা ডিসেম্বর অবধি নথি বলছে যে এবার নাকি ২৭৪ জল সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিউইয়র্কের একটি শাখা এই তথ্য তৈরি করতে গিয়ে দেখেছে যে ১৯৯০-এর পর থেকে এই সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে।


গত বছরেও নাকি ২৫০ জন সাংবাদিককে জেলবন্দি করা হয়েছিল। রিপোর্টে জানানো হচ্ছে যে, এইবছরে অতিমারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতা এর জন্য দায়ী। আরো জানা যাচ্ছে যে সংবাদ সংগ্রাহকদের এই দুরবস্থা সবথেকে বেশি হয়েছে চিন, টার্কি আর ইজিপ্টে। আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে করোনা মহামারির খবর করেছিল যে তিনজন ফ্রিলান্স রিপোর্টার তাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তথ্যে উঠে এসেছে যে অনেক সাংবাদিক নাকি জেলবন্দি অবস্থায় করোনা আক্রান্ত হয়েও মারা গেছেন। গতমাসেই আসামে সাংবাদিক প্রয়াগ ভুয়ানকে প্রকাশ্য রাস্তায় খুন করে দেওয়া হয়। সেই তদন্ত এখনো বিচারধীন। উত্তরপ্রদেশের এক সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পানের জামিন এখনো মঞ্জুর হয়নি। সিদ্দিকিকে অক্টোবর মাসে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ জামিন না-মঞ্জুর ধারায় গ্রেফতার করে। সিদ্দিকির অপরাধ ছিল যে সে একটি দলিত মেয়ের গণধর্ষণের খবর করেছিল। এরকম ঘটনা ঘটেছে দেশ থেকে বিদেশে। ব্ল্যাক লাইফস ম্যাটার আন্দোলনের জেরে ট্রাম্প সরকার প্রচুর সাংবাদিককে ধরে জেলে পুরে দিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ সাবধান! করোনাভাইরাসের ‘শক্তিশালী’ নতুন প্রজাতির কবলে ১০০০! ছড়িয়েছে ৬০ এর বেশি অঞ্চলে!
সিপিজির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর জোয়েল সিমন জানিয়েছেন যে, ‘এই ন্যক্কড়জনক ঘটনা সারা দুনিয়া জুড়ে চলছে, এই অতিমারির মাঝে শয়ে শয়ে সাংবাদিককে জেলবন্দি করা হয়েছে’। এরই মধ্যে রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, সারা দুনিয়া জুড়ে ক্ষয়িষ্ণু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নাকি এর জন্য দায়ী। এছাড়া মিথ্যে খবরের নাম করে অনেক সাংবাদিককে ধরপাকড় করা হয়েছে। রিপোর্টে জানা যাচ্ছে যে, বেলারুশ, ইথিওপিয়া এই দুইদেশে ক্রমশ সাংবাদিক গ্রেফতারের সংখ্যা বাড়ছে। এরজন্য সেইদেশের রাজনৈতিক অবস্থা বিশেষ করে দায়ী। সেখানে নাকি এক-তৃতীয়াংশ সাংবাদিক কেবল মাত্র সরকারবিরোধী কার্যালাপের জন্য জেলবন্দি হয়েছে।