দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বছর শেষে ও কাটলো না বিপর্যয়। দামাল ভূমিকম্পের মুখে পরলো ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯০ সালে একবার বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। তার পরে আর তেমন ভূমিকম্প দেখা যায়নি এই ছোট্ট দেশটিতে। এখনো বছর শেষ হয়নি। বছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র দু’দিন। কিন্তু তার আগেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হল ক্রোয়েশিয়া।২০২০,বছরের শুরুটা হয়েছিল করোনার উপদ্রব দিয়ে।নতুন বছরের আগমনের আগে এই বড় বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে নিজের অস্তিত্ত্ব জানান দিল ২০২০।
মেয়র দারিনকো দুম্বোভিক জানিয়েছেন, “হিরোশিমার মতো কাঁপছিল আমার শহর। তিনি দাবি করেন অর্ধেক শহর একেবারে গুঁড়িয়ে গিয়েছে। অধিকাংশ বাড়িই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।” ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, “জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার কাজে বাহিনী পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজে নেমে পড়েছে সেনা। ৫০০টি অস্থায়ী ক্যাম্প করে সেখানে শহরের বাসিন্দাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত অবস্থা শহরের বাসিন্দাদের।”
মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যাবধানে ৬.৩ মাত্রার তীব্র ভূমিকম্পে তাসের ঘরের মতো হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল ক্রোয়েশিয়ার বাড়িঘর। সমগ্র ক্রোয়েশিয়াতেই এই কম্পন অনুভূত হয়।আতঙ্কিত লোকজন ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসেন। শুধুমাত্র ক্রোয়েশিয়া নয়,এর পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ যেমন সার্বিয়া, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং অস্ট্রিয়ায় দক্ষিণাংশেও ভূমিকম্পেরটের পেয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।


সংবাদ সূত্র অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত এই ভূমিকম্পে ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। আহতের সংখ্যা কয়েক ডজন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ভূমকম্প প্রবণ দেশ হলেও এতো বড় মাপের কম্পন এর আগে কখনও হয়নি এই দেশে। ইউরোপীয় ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র জানাচ্ছে, “মঙ্গলবার আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৩। উত্সস্থল ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবের ৪৬ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে। কম্পনের আঘাতে পেট্রিঞ্জা শহর ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সোমবারই এই শহরে ৫.২ তীব্রতার ভূমিকম্প আঘাত হনেছিল।”
এখনও পর্যন্ত ১২ বছরের এক কিশোরীর মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। বাকি ৫ জন মারা গিয়েছেন এই শহর লাগোয়া এক গ্রামে। ক্রোয়েশিয়ার HRT টেলিভিশনে এই ছ’জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। কমপক্ষে এখন ও পর্যন্ত ২০ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এখনও অনেকের খোঁজ মিলছে না। ফলে, আরও মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এনওয়ান নিউজ চ্যানেলের ফুটেজে ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিত এক শিশু এবং এক ব্যক্তিকে টেনে বের করে আনতে দেখা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই পেট্রিঞ্জা শহরে উদ্ধারকাজে সেনার সাহায্য চাওয়া হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে প্রাণের খোঁজ চলছে।
ক্রোয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী পেট্রিঞ্জা শহরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। তিনি জানান, “সাহায্যের জন্য সেনাবাহিনী সেখানে আছে। শহরটি এই মুহূর্তে নিরাপদ নয় বলেই মনে করছে ক্রোয়েশিয়া সরকার।”