দ্যা ক্যালকাটামিরর ব্যুরো: এ বছর আমেরিকায় নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকেই পাখির চোখ করে তুরুপের তাস ফেলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি সোমবার একটি এগজিকিউটিভ অর্ডারে সই করলেন। এর ফলে মার্কিন ফেডেরাল এজেন্সিগুলি H1-B ভিসায় আমেরিকায় থাকা বিদেশি নাগরিকদের কাজে বহাল করতে পারবে না। ফলত: অনসাইটে যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রেখেছেন যে সব ভারতীয় আইটি কর্মী, তাঁদের জন্য এই অর্ডার নি: সন্দেহে একটি দুঃসংবাদ।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন ট্রাম্প প্রশাসন H1-B ভিসা সহ অন্যান্য বিদেশি কর্মী ভিসা সাসপেন্ড করে। আসলে আমেরিকায় এই নির্বাচনের বছরে মার্কিনীদের ক্ষোভ প্রতিহত করতে আর সেখানকার কাজের বাজার শুধুমাত্র মার্কিনীদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও ২০২০-র শেষ পর্যন্ত এই সাসপেনশনের নির্দেশ জারি থাকবে বলে ওয়াশিংটন জানিয়েছে।
প্রতিবছরই বিপুল পরিমাণে ভারতীয় আইটি কর্মী H1-B ভিসা নিয়ে আমেরিকায় গিয়ে কাজ করেন। ব্যয় সংকোচের জন্যে আমেরিকার প্রযুক্তিভিত্তিক কোম্পানিগুলি প্রতি বছর ভারত এবং চিন থেকে হাজার হাজার আইটি কর্মী আউট সোর্স করে।
আগামী নভেম্বর মাসে আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী তথা দেশের প্রাক্তন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একটি অনলাইন সমাবেশে বাইডেন বলেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ফের H1-B ভিসা দেওয়া হবে আমেরিকায় বিদেশি নাগরিকদের কাজ করার জন্য। জো বাইডেন আরও বলেন, যাঁরা এই ভিসা নিয়ে আমেরিকায় কাজ করেছেন, তাঁদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভালই হয়েছে। এইচ ওয়ান বি-সহ আরও কয়েকটি ভিসার সাহায্যেই দক্ষ বিদেশি কর্মীদের আমেরিকায় নিয়ে যায় মার্কিন সংস্থাগুলি।
হোয়াইট হাউসের ওভাল কার্যালয় থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নয়া নির্দেশে স্বাক্ষর করার আগে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘যাতে আমেরিকানরাই মার্কিন মুলুকে ভালোভাবে বাস করতে পারেন তা নিশ্চিত করার জন্য আজ আমি একটি নির্দেশনামায় স্বাক্ষর করছি।’
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তাঁর প্রতিদন্ধী বাইডেনের ঠিক বিপরীত প্রান্তে দাঁড়িয়ে সাফ জানিয়ে দেন যে বিদেশ থেকে সস্তায় কর্মীদের নিয়ে এসে নিয়োগ করে প্রকারান্তরে মার্কিন নাগরিকদের কাজের বাজার খারাপ করতে আর দেবে না তাঁর প্রশাসন।
তবে ট্রাম্প একথাও জানিয়েছেন যে খুব শিগগির ইমিগ্রেশন বিল নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে চলেছেন তিনি। তাঁর দাবি-‘এই ইমিগ্রেশন বিলের প্রস্তাব পুরোপুরি যোগ্যতার ভিত্তিতে হবে, ফলে এটা যে কোনও শ্রমিকের পক্ষেই দুর্দান্ত সুযোগ হবে আর যারা আমাদের দেশে এসে কাজ করতে চান এটি তাদের পক্ষেও লাভ জনক হবে, তবে শর্ত একটাই আমাদের দেশের আইন মেনে চলতে হবে আর আমেরিকাকে ভালবাসতে হবে।’
তবে অনেকেই বলছেন ট্রাম্প ইচ্ছাকৃত ভণিতা করছেন। এর আগের নির্বাচনে মার্কিনদের স্বার্থ বজায় রাখাকে হাতিয়ার করে জিতলেও তিনি সেভাবে মন যুগিয়ে চলতে পারেন নি। সেই সাথে কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে দেশে বেকারের সংখ্যা রোজ বাড়ছে, যা আসন্ন নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে সেটা চতুর ট্রাম্প আগেই আঁচ করেছেন তাই H1-B ভিসার ওপরে কাঁচি চালিয়ে আদতে দেশীয় কোম্পানী গুলোকেই বিপাকে ফেলে মার্কিনদের কাছে হিরো হওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে মার্কিনরা এই চালকে কতটা অগ্রাধিকার দেয় সেটা আগামী নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফলই জানান দেবে।