দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যখন বিশ্বজুড়ে লড়াই চলছে তখন সর্বোচ্চ আক্রান্তের দেশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কিছুটা গা-জোয়ারি করেই নির্বাচনের ফায়দা লুটতে ব্যস্ত। ইতিমধ্যে আমেরিকাতে মৃত্যুর সংখ্যা দের লক্ষ ছাড়িয়েছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো প্রদেশ থেকে মাত্রাতিরিক্ত সংক্রমণের খবর মিলছে আর এই চলমান সংকটের মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে পুনরায় স্কুল খোলার অনুমতি দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। আর সেই নির্দেশ মেনে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে স্কুলও চালু হয়েছে। আর এক মাসের ও কম সময়ের মধ্যে সামনে এসেছে চমকে দেওয়ার মত তথ্য। মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে, ১৪ দিনের মধ্যেই প্রায় ১ লক্ষ শিশুপড়ুয়া করোনায় আক্রান্ত।
ওয়ার্ল্ডোমিটার জানাচ্ছে, ১৪ অগস্ট সকাল পর্যন্ত আমেরিকাতে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যাগত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত ৩৫ হাজার ১৫১ জন। আমেরিকায় বর্তমানে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ লক্ষ ৪ হাজার ৫৬৭।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স সম্প্রতি সমীক্ষা চালিয়েছে। আর সেই রিপোর্ট এ তারা প্রকাশ করেছে। যে পুনরায় স্কুল চালু হতেই মাত্র দু-সপ্তাহের মধ্যে এক লক্ষের কাছাকাছি শিশুপড়ুয়ার কোভিড টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ। এখনো অবধি তাদের অফিসিয়াল সমীক্ষায় এই সংখ্যা ৯৭ হাজার ছাড়িয়েছে। তাদের ধারণা স্কুলে যাতায়াতের পথেই এই সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে কিন্তু এখনো এর সঠিক কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যায় নি। যদিও শিশুদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রবণতা কম বলে যে দাবি এতদিন করা হচ্ছিল, আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্সের সমীক্ষা রিপোর্ট তা নস্যাত্ করে দেয়।
ওই রিপোর্ট এ আরও দাবি করা হয় যে, ওই দু-সপ্তাহে কমপক্ষে ২৫ শিশু করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছে। মাত্র দু-সপ্তাহেই যদি প্রায় এক লক্ষ শিশু সংক্রামিত হয়, তা হলে স্কুল টানা চালু রাখলে, সংখ্যাটা গিয়ে কোথায় পৌঁছবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়েছে। অবশ্য এই বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। এমনও শোনা যাচ্ছে না যে স্কুলগুলি পুনরায় বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ এসেছে ।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে আমেরিকায় সর্বমোট ৫০ লক্ষ কোভিড কেস ধরা পড়ে। যার মধ্যে ৩ লক্ষ ৩৮ হাজার শিশু রয়েছে। ইতিমধ্যে আমেরিকায় মৃত্যু হয়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার আক্রান্তের। শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোয় উদ্বেগ বাড়ছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। এই প্রসঙ্গে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর টিনা হার্টার্ট বলেন, শিশুদের মধ্যে কোভিড টেস্টের হার বাড়িয়ে সংক্রমণে ছোটদের ভূমিকা নির্ধারণ সহজতর করতে হবে। যদিও কী ভাবে প্রাণঘাতী কোভিডের সংক্রমণ ন্যূনতমে নামিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা করছে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পরিকল্পনা করলেও এখনো আমেরিকাতে সঠিকভাবে মাস্ক এর ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি সেইভাবে বলবত্ হয় নি। এমন কী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও ফেস-মাস্ক ব্যবহার করতে গড় রাজি!