দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: নীতি আয়োগ’ জানিয়েছেন আজ থেকে করোণা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু হয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটিকে ভ্যাকসিনের দাম নির্ধারণ করতে বলেছে ভারত সরকার। শোনা যাচ্ছে, ভারত যে ভ্যাকসিন বানাবে তা বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা ভ্যাকসিন হবে। তবে সকলের যে ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে এমনটা নয়। কারণ মার্কিন গবেষণার একটা শতাংশ করোনার এক অভিনব চিকিৎসা পদ্ধতির আবিষ্কার করেছেন। যা কিনা মানুষের দেহের ইমিউনিটি কে এক লহমাতেই বাড়িয়ে দেবে। এককথায় ইন্সট্যান্ট ইম্যুনিটী বুস্টার।
ভ্যাকসিন বাজারজাত হওয়ার আগেই আবিষ্কৃত হল করোনার নয়া দাওয়াই ‘মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’। ইতিমধ্যেই আমরা করোনার ভ্যাকসিন আবিস্কারের কথাও শুনেছি। কিন্তু তাদের মধ্যে কোনোটি কার্যকরী হবে তা এখনো জানা যায় নি সেভাবে কারণ সবকটার’ই এখনও ট্রায়াল চলছে। তবে এবার আবিষ্কার হল করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন হাতিয়ার একটি আশ্চর্য ‘অ্যান্টিবডি’- র।
এই ‘মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি’ মানুষের শরীরকে করোণা প্রতিরোধে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন চিকিৎসকরা। তাদের মতে, ‘ভ্যাকসিনের আগেই এই অ্যান্টবডি হাতে চলে আসবে। যার ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ এর ভঙ্গিতেই বলেছেন আমেরিকার এন আই ডি আই এ -এর প্রধান এন্টনি ফৌসি’। তবে এই ওষুধ সাধারণ মানুষের তুলনায় করোনার প্রথম সারির যোদ্ধাদের বেশি প্রয়োজন। কারণ তারা প্রতিদিন আক্রান্তদের নিয়ে ঘাটাঘাটি করছেন। এই ঔষুধের ফলে যদি বাড়তি একটা রক্ষাকবচ পাওয়া যায় তবে তাদের কাছে লড়াইটা নিঃসন্দে আরো সহজ হবে।
তাঁদের মতে এটি হল ভ্যাকসিনের আপডেটেড ভার্সন। কেউ কেউ বলছেন এই ওষুধ নাকি টিকার থেকেও শক্তিশালী। অধিকাংশ মার্কিন বিজ্ঞানীদের মতে ,রেমডিসিভির বা ডেক্সামিথাসন -এর থেকেও বেশি কার্যকরী হতে পারে এই অ্যান্টিবডি। তবে এই ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি থেকে বাজারে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া বেশ জটিল। ফলে এই ওষুধের দামও নাকি হবে অনেকটা বেশি।
১৫ই জুলাই করোনা মোকাবেলার এই অ্যান্টি বডি ট্রায়ালের আর্জি জানিয়ে মার্কিন প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় ‘লিলি’ ,’অ্যাবসেলেরা’, ‘স্মিথ’ -এর মত কয়েকটি সংস্থা। ২৯ শে মে কানাডার সংস্থা ‘অ্যাবসেলেরার’ সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই অ্যান্টিবডির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করেছেন তারা। মার্কিন ওষুধ নির্মাতা সংস্থা ‘লিলি’ জানিয়েছেন, “প্রথম দফার ট্রায়াল চলেছে হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন ‘কোভিড’ রোগীদের ওপর সংস্থার প্রথম ট্রায়াল চলেছে। প্রথম ট্রায়ালে দারুণ সফল হয়েছে এই দাওয়াই”।
‘মনোক্লোনাল এন্টিবডি’ ট্রায়াল শুরু হতেই ‘লিলির’ চিনা পার্টনার “জন বায়োসাইন্সেস” এবং “REGENERON”নামের দুটি সংস্থা তিন ধরনের মনোক্লোনাল এন্টিবডির মিশ্রণ তৈরি করেন। এবং তা করোনার প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করছেন। তারা জানিয়েছেন এই মিশ্রন ‘ইবোলা’ প্রতিকারেও দারুণ কাজ করেছিল। আপাতত এই অ্যান্টিবডির কোনো পোশাকি নাম দেওয়া হয়নি। কারন এখনও এই অ্যান্টিবডির পরীক্ষা চলছে ল্যাবটরিতে। বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি করোণা জয়ীর শরীরেই প্রথম এই অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব খুঁজে পান।
‘অ্যাবসেলেরা’ বায়োলজি সংস্থার প্রথম পর্যায়ের ট্রায়াল সফল হওয়ার পরেই এই অ্যান্টিবডিকে বাজারে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। এবার শুরুর পালা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল। তথ্য বলছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৩০০ ভলেন্টিয়ারের ওপর এই অ্যান্টি বডি ট্রায়াল করা হবে। মূলত ১৩ দিনের কম মৃদু উপসর্গ নিয়ে যে সকল রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের উপরেই করা হবে এই তৃতীয় দফার ট্রায়াল। প্রথমদিকে ৩০০ এবং পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ১০০০ জনের শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা যেতে পারে। “এই অ্যান্টিবায়োটিক কামাল করতে পারেন” বলে জানিয়েছেন নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মাইরান কোহেন। অন্যান্য গবেষকদের মতে “ছকভাঙা পথে বিজ্ঞানের মোর গড়াতে পারে এই পদ্ধতি।”