দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: চিকিৎসকদের কথায়, “সবচেয়ে আতঙ্কের হল, কোভিড-১৯ এবং ফ্লু-এর উপসর্গ প্রায় একই রকম। রোগী দেখে কী হয়েছে বলা মুশকিল হচ্ছে”। শীতের মরসুম পড়তে চলেছে। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর-এর মাঝের সময়টাকে মার্কিন মুলুকে ‘ফল’ নয় বরং ‘ফ্লু’ -এর সিজন বলা যেতে পারে। কারণ এমনিতেই করোনা নিয়ে নাজেহাল আমেরিকাবাসী,তাঁর মধ্যে গোঁদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো দাঁড়িয়েছে ‘ইনফ্লুয়েঞ্জা’ বা ‘ফ্লু’।
এই সিচুয়েশনকে সেখানকার চিকিৎসকরা ‘টুইনডেমিক সিচুয়েশন’ বলছেন। এই ফ্লু’এ আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় আকাশ ছুঁই, মৃত্যু দু’লাখের ওপর। হাসপাতালে শয্যা উপচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে অভাব পড়ছে বেডের। সঙ্গে চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব। ডাক্তার সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা ওভার টাইম করতে করতে ক্লান্ত।
এমতাবস্থায় আমেরিকার দৈনিক সংক্রামনের হার কমতে না কমতেই ফ্লু এসে যোগ দিয়েছে। আর তার দরুণ মার্কিন চিকিৎসকেরা আগাম ইনফ্লুয়েঞ্জা-র ভ্যাকসিন নেওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষদের। তবে এ ও জানাচ্ছেন কোভিড-১৯ রুখতে ‘ফ্লু’-র ভ্যাকসিন কোনো কাজ দেবে না। এটি শুধু ইনফ্লুয়েঞ্জা-র প্রকোপ আটকাবে।
সাধারণত করোনা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা এই দুই রোগের উপসর্গ এক। দুই রোগেই জ্বর, সর্দি-কাশি, প্রবল ঠান্ডালাগা এবং শ্বাসকষ্ট রয়েছে। তফাৎ শুধু এটুকুই কোভিডে গন্ধ, স্বাদের অনুভূতি চলে যায়। তবে করোনা আক্রান্তের সকলেরই যে গন্ধ-স্বাদ চলে যায় তেমনটা নয়। তেমনই ফ্লু-তে ও অনেকসময় ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হয়ে যায়,জিভের ও স্বাদ চলে যায়। সুতরাং করোনা-র রিপোর্ট হাতে না আসা ওবধি রোগ বোঝা দায় হয়ে যাচ্ছে চিকিৎসকদের।
এ প্রসঙ্গে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের ডিরেক্টর গ্যারি সিমন বলেন,” এ বছরটা ভয়ানক কঠিন হতে চলেছে। হয় ফ্লু, না হলে করোনা”। বিশেষজ্ঞদের দাবি করোনা থেকে ইনফ্লুয়েঞ্জা সমলানো তুলনামূলক সহজ। কোভিডের তুলনায় ইনফ্লুয়েঞ্জা-য় সংক্রমনের উপসর্গ দ্রুত দেখা যায়।এতে ১ থেকে ৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়,যার চিকিৎসাও দ্রুত সম্ভব।
এছাড়া উপসর্গ দেখা দেওয়ার আগে পর্যন্ত কোনো ‘ফ্লু’ রোগীর থেকে অন্য কেউ আক্রান্ত হতে পারেন তবে এরপর আর সংক্রমন ঘটে না। কিন্তু করোনা হলে দু-তিন সপ্তাহ বাদে ও উপসর্গ দেখা দিতে পারে।অর্থাৎ করোনা ভাইরাস ফ্লু এর থেকেও বেশী সংক্রামক ব্যাধি।