দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনা আবহে পুজো নিয়ে চলছে হাজারো বিতর্ক। ইতিমধ্যেই হাইকোর্ট পুজো বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। তবে সারা বছরের এতো উদ্যোগের পর পুরোপুরি ভাবে পুজো বন্ধ করতে নারাজ পুজো উদ্যোগতাদের সঙ্গে আম জনতা ও। তাই সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিউনর্মালে এবার অন্যরকম পুজো করার উদ্যোগ নিয়েছেন পুজো কমিটি গুলি। ভাইরাসের রোষ এখন ও কাটেনি। কিন্তু তাতে কি! ভাইরাসের আতঙ্ককে দূরে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সকলে।আর এইরকমই এক উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতার মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের পড়ুয়ারা।
তাদের এই উদ্যোগ এবছর পা দিল দশ বছরে। অনেক অপেক্ষার অবসান ঘটলো আজ। গত ন’বছরের মতো এবছরেরও পুজো পরিক্রমা স্বার্থকতা লাভ করেছে। তবে এবার আর কলকাতা শহরতলির শিশুদের নিয়ে ঘোরা নয়, বরং এবার শহর পেরিয়ে জেলার দুঃস্থ শিশুদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল পুজো পরিক্রমা টিমের কিছু সদস্যগন।পুজোর আনন্দ ছড়িয়ে দিতে চতুর্থীতে এই টিম পৌঁছালো বেলপাহাড়ির কাছে এক প্রত্যন্ত গ্রাম বালিচুয়ার -এ।মঙ্গলবার এই দিন এই গ্রামের ১২০ জন আদিবাসী ও দুঃস্থ শিশুদের মুখে হাসি ফোঁটাল সাংবাদিকতার পাঠ নিতে আসা কলেজ পড়ুয়ারা।
এই দিন পুজো পরিক্রমা টিমের পক্ষ থেকে গ্রামের আদিবাসী, দুঃস্থ এবং পিছিয়ে পড়া শিশুকদের নতুন বস্ত্র,দু’টি করে মাস্ক এবং স্যানিটাইজার তুলে দেওয়া হয়। এদিন সকাল ১১টায় বালিচুয়া দুর্গোৎসব কমিটির পুজো প্রাঙ্গনে শিশুদের হাতে নতুন জামাকাপড় তুলে দেওয়া হয়। তবে এসব অবশ্য সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই অনুষ্ঠিত করা হয়।


গ্রামের এই শিশুগুলো দু-বেলা খেতে পায় না, মাথা গোজার ঠাঁই ও নেই ঠিক মতো। আর পুজোয় নতুন জামা হওয়া তো দূরস্থ। তাই তাঁদের এই অপূর্ণ ইচ্ছেকে পূর্ণতা দিতেই এগিয়ে এলো মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের একদল পড়ুয়ারা।করোনা অসময়ে এইসব শিশুদের মুখে হাসি ফুঁটিয়ে খুশি পড়ুয়ারাও। নিজেদের পুজোর খরচা বাঁচিয়ে এত আয়োজন করেছে ওরা।
এ প্রসঙ্গে মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বিশ্বজিৎ দাস জানান, পুজো পরিক্রমার যাবতীয় খরচের অর্থ কলেজের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা, অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা নিজেরাই সংগ্রহ করেছে। অন্য বিভাগের অধ্যাপকরাও এগিয়ে এসেছেন এই উদ্যোগে। এই করোনা সংকটের সময়েও বিভাগের সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা যেভাবে অর্থ সংগ্রহ করেছে, যেভাবে পাশে থেকেছে, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তার জন্য শিক্ষক হিসেবে আমি গর্বিত। সকলে হয়তো আসতে পারেনি। তবে ভার্চুয়াল প্রযুক্তির সৌজন্যে সকলেই ছিল গোটা অনুষ্ঠানে।
উদ্যোগ প্রসঙ্গে কলেজ পড়ুয়ারা জানান, শুধু পুজো পরিক্রমার দিন নয়, সারাবছর ধরেই দুঃস্থ ও পিছিয়ে পড়া শিশুদের পাশে দাঁড়াতে একগুচ্ছ পরিকল্পনা নিয়েছে মহারাজা মনীন্দ্রচন্দ্র কলেজের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা।