দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: আড্ডা আর ঐতিহ্যের উত্সব দুর্গাপূজা। প্যান্ডেল হপিং সাথে চুটিয়ে পেট পুজো এই হল বাঙালির পুজো রেজিলিউশন। কিন্তু এই বছরটা সম্পুর্ণভাবে আলাদা। এবার আনন্দের থেকেও বেশি শঙ্কার যে কারণে হাই কোর্টের লাগামে প্যান্ডেল মুখী হতে পারছে না আপামর বাঙালি। কিন্তু এই দু:ক্ষের থেকেও করোনার জেরে এখন হাসপাতালে ভর্তি তাঁদের ও পরিবারের কাছে এবারের পুজোটা ভিশনভাবে কষ্টকর। শারীরিক ও মানসিক উভয় উদ্বেগের মধ্যে তাঁদের দিন কাটছে। তাই পুজোর কটা দিন করোনা রোগীদের মন ভালো করতে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি ৮০০ কোভিড রোগীর জন্য এবার পুজোর ক’দিন এলাহি খাবারের বন্দোবস্ত।
হ্যাঁ, এলাহি এই কারণে, কারণ ষষ্ঠী থেকে দশমী প্রতিদিনের মেনুতেই রয়েছে বনেদিয়ানা ও বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। সূত্রের খবর অনুযায়ী ষষ্ঠীর দিন হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের জলখাবারে ছিল লুচি, আলুর দম, দরবেশ, বোঁদে। দুপুরে সরু বাসমতী চালের ভাত, মাছের মাথা দিয়ে মুগডাল, শুক্তো, পাবদা মাছ। রাতে পাঁঠার মাংস।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ এভাবেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীতেও করোনা রোগীদের জন্য এলাহি ভুরিভোজের আয়োজন করেছে। বাঙালি পদে ভরপুর এই খাদ্য তালিকায় সকালে লুচি, আলুর দম ও মিষ্টি থেকে দুপুরে বাসমতী চালের ভাত, মাছের মাথা দিয়ে মুগডাল, শুক্তো, রুইমাছের কালিয়া, নবরত্ন পনির কোর্মা, কী নেই!
এখানেই শেষ নয়। রাতের খাবার তালিকায় থাকছে চিকেন স্যুপ অথবা চিকেন কষা আর ব্রাউন ব্রেড। আর নবমীর দুপুরে ভাত, ডাল, শুক্তোর সঙ্গে পাতে পড়বে স্পেশাল কচি পাঁঠার ঝোল। ওইদিন ডিনারে পাবদা ঝাল কিংবা কষা মুরগির মাংসও থাকছে। দশমীতেও এরকমই কবজি ডুবিয়ে খাবারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য বর্তমানে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজি নিজেই করোনা সংক্রমিত। করোনা হওয়ার আগে এক বৈঠকে তিনি নিজেই পুজোর দিনগুলিতে কোভিড রোগীদের জন্য স্পেশাল মেনু রাখার কথা জানিয়েছিলেন। আর এবার তাঁর দেখভালেই সমস্ত আয়োজন, বলেই হাসপাতাল সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে।
এই এলাহি খাবারের আয়োজন ছাড়াও করোনা রোগীদের জন্য পুজোয় মেডিক্যাল কলেজের তরফ থেকে নতুন জামাকাপড় উপহার দেওয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি থাকছে ৪০ জন কোভিড ওয়ারিয়র, ১০০ জন জুনিয়র ডাক্তার ও নার্সকে সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠানও। এক কথায় নিউনর্ম্যালের প্রথম পুজো এই মানুষগুলোর জীবনে সুস্থতা ও বেঁচে থাকার আনন্দ ফিরিয়ে অনুক এটাই চাইছে দেবী দুর্গার কাছে সকল বাঙালি।