দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কলকাতা হাইকোর্ট করোনা মহামারী পরিস্থিতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ও মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড়ের বিগত বছরগুলির ডেটা বিশ্লেষণ করে এবারের দুর্গাপুজোয় একাধিক বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এরফলে ইচ্ছা থাকেল এবার দর্শকশূন্য মন্ডপে দুর্গাপুজো হয়েছে। যুগান্তকারী ও ঐতিহাসিক ওই রায়ে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উত্সব দুর্গাপুজোতেও বাঙালিকে পাড়াবন্দি করা গিয়েছে।
তবে এবারে দুর্গাপুজোর মত জগদ্ধাত্রীপুজো, কালীপুজো ও ছটপুজোতেও একইরকম বিধিনিষেধ আরোপ করুক কলকাতা হাইকোর্ট;এমনই আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছেন অজয় কুমার দে। এর আগেও দুর্গাপুজোয় মণ্ডপে সাধারণ দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলাটিও করেছিলেন অজয়বাবু।
উল্লেখ্য তাঁর আগের করা সেই জনস্বার্থ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল,প্রতিটি পুজো মণ্ডপ হবে NO ENTRY জোন। মণ্ডপে ঢুকতে পারবেন না সাধারণ বা VIP দর্শনার্থীরাও। পুজোয় দর্শকশূন্য থাকবে মন্ডপ। প্রতিটি পুজো মণ্ডপকে কন্টেনমেন্ট জোন হিসেব গণ্য করা হবে। মন্ডপে ২৫ জন ক্লাবের মেম্বার প্রবেশ করতে পারবে আর সেই লিস্ট প্রতিদিন পরিবর্তিতও হবে। মন্ডপে মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
বড় মন্ডপের ক্ষেত্রে দূরত্ব হবে ১০ মিটার। আর ছোট মন্ডপের ক্ষেত্রে দূরত্ব ৫ মিটার। এই এলাকায় কোনও দর্শনার্থী ঢুকতে পারবেন না। মন্ডপের বাইরে লাগাতে হবে নো-এন্ট্রি বোর্ড। মণ্ডপে কেবলমাত্র পুজো উদ্যোক্তাদের কয়েকজন ঢুকতে পারবেন বলে রায় দিয়েছে আদালত।
এই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ফোরাম ফর দুর্গোত্সব কমিটি। সেখানেও কলকাতা হাইকোর্ট আগের রায়ই বহাল রাখে। শুধুমাত্র বড় পুজা মণ্ডপগুলিতে ২৫ জনের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৬০ জন ও ছোটো পুজা মণ্ডপে সর্বোচ্চ ২০ জনের প্রবেশের অনুমতি দেয় আদালত।
কিন্তু দুর্গাপুজোর এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টে না গিয়ে হাইকোর্টের রায়কেই মান্যতা দেয় রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের পুজো-রায়ের বিরুদ্ধে আর সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়নি রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে এবার রাজ্যবাসীকে বাড়ি বসে ভার্চুয়ালি পুজো দেখারও আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার। এবার দেখার বিষয় আগামী জগদ্ধাত্রী, কালীপুজো ও ছটপুজোতে কলকাতা কলকাতা হাইকোর্ট কী রায় দেয়।
বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাত, মধ্যমগ্রাম কালীপুজা, ওদিকে খরদহ, চন্দননগর জগদ্ধাত্রী পুজোর জন্যে আর ব্যারাকপুর সহ মেন লাইনে অধিকাংশ যায়গায় ছট পুজোতে প্রচুর ভিড় হয়। কলকাতার দুর্গাপুজোর মতই দর্শনার্থী জমা হয় সেখানে। যেহেতু করোনা সংক্রমণে উত্তর ২৪ পরগণা শীর্ষে, তাই ছার থাকলে এই সংক্রমণ মারাত্বক রূপ নিতে পারে
বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেদিক থেকে অজয়বাবুর এই মামলা’র সমাজের প্রতি ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এখন লক্ষণীয় হাইকোর্ট কী রায় দেয়।