দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কোভিড-১৯ আবহে দুর্গাপুজো এবার দর্শনার্থী শূন্য জৌলুসহীন হয়েছে। হাইকোর্টের কড়া নির্দেশে মণ্ডপের ৫-১০ মিটারের বাইরেই সীমাবদ্ধ থেকেছিল দর্শনার্থীদের প্রবেশ। সেই সাথে ভিড় করা নিয়েও ছিল কড়া নির্দেশ। এবার দীপাবলি বা দিওয়ালি’র রাতে শব্দবাজি পোড়ানো বন্ধ করতে সোমবার সকালে হাইকোর্টে দায়ের করা হচ্ছে মামলা এমনটাই সূত্রের খবর। আর এই জনস্বার্থ মামলাতে যুক্ত আছেন একাধিক আইনজীবি এমনটাই জানা যাচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাইকোর্টের এক আইনজীবির বক্তব্য; কোভীড রোগে যেহেতু ফুসফুসের ক্ষতিই প্রধান উপসর্গ, তাই শব্দবাজি বিশেষ করে আতশবাজি পোড়ানোর জন্যে যে ধোঁয়া উত্পন্ন হয় তাতে শ্বাসকষ্ট সহ, বায়ু দূষণ জনিত অনেক রোগ জড়িত। তাঁদের মতে এর আগে হাইকোর্টে যা যা মামলা দায়ের হয়েছে এই বাজি নিয়ে তার অধিকাংশই শব্দ দূষণ নিয়ে। কিন্তু এবারে করোনা পরিস্থিতি বায়ু দূষণকে নিয়ন্ত্রনে না রাখতে পারলে বেড়ে যেতে পারে, তাই এই জনস্বার্থ মামলা। মামলাটি সোমবার সকালে হাইকোর্টে দায়ের করা হবে বলে খবর।
আতশবাজি সংক্রান্ত এই মামলা তে বাজি তৈরি, বিক্রি ও পোড়ানো এই তিনটি বিষয়ের অপরেই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগের জন্যে আবেদন জানান হবে বলে খবর। এই বিষয়ে রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায়ের বক্তব্য সুপ্রীম কোর্টের রায়ে ১২৫ ডেসিবেলের নিচে বাজি তৈরি ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই। সুতরাং তারা বেআইনি কোনো কাজ করছেন না। তিনি আরও বলেন যে আমাদের এই রাজ্যে ৯০ ডেসিবেলের আতশবাজি তৈরি ও বিক্রি কড়া হয়ে থাকে, তাই আইনিভাবে এটা বন্ধ কড়া যাবে না। বাবলা বাবুর মতে এখনো অবধি পশ্চিমবঙ্গে আতশবাজির ধোঁয়া বা শব্দের কারণে যে কারোর মৃত্যু হয়েছে সে খবর নেই। সুতরাং এই মামলা ভিত্তিহীন।
তবে তাঁর এই মন্তব্যের পাশাপাশি তিনি এও হুশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি হাইকোর্টের নির্দেশে আতশবাজি বিক্রি ও উত্পাদপনের ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয় তাহলে তাঁরা রাস্তা অবরোধ সহ বিক্ষোভ আন্দোলনে নামবেন যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাবলা বাবু এও বলেন যে “সারা রাজ্যে প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ এই বাজি শিল্পের সাথে জড়িত, তাই সুপ্রীম কোর্ট যেহেতু তার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি সেখানে হাইকোর্ট ও সেই একই নির্দেশ বহাল রাখতে পারে।”
এই ঘটনার পাশাপাশি বাবলা বাবুর ধারণা এই ঘটনার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে কেউ বা কারা, পশ্চিমবঙ্গের বাজি বিক্রি বন্ধ করে অন্য রাজ্য থেকে বাজি আমদানি করতে চাইছেন। এই মন্দা অর্থনীতিতে এই ধরণের ঘটনা লক্ষ লক্ষ মানুষের মুখের অন্য কেড়ে নেবে বলে দু:খপ্রকাশ করেন তিনি। তবে তাঁর দাবি এই মামলা হাই কোর্টে খারিজ হয়ে যাবে। যদিও এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক তথা আইনিজীবী শুভঙ্কর মান্না’র প্রতিক্রিয়া জানা যায় নি। তবে কী এবারের দীপাবলীর আকাশ সত্যিই হতে চলেছে আতশবাজি শূন্য!? নজর থাকবে সোমবারের হাই কোর্ট আপডেটে।