দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবার কলকাতায়। ফ্রান্স কনসুলেটের সামনে ইসলাম ধর্মাবলম্বির মানুষরা প্ল্যাকার্ড ও পোস্টার হাতে বিক্ষোভ দেখায়। তবে জোর করে কনসুলেটে ঢুকতে চাইলেও তাঁদের বিক্ষোভ অভিযান ব্যর্থ হয় পুলিশি হস্তক্ষেপে। কনসুলেটের অনেক আগেই থেকে বাঁধা দেয় পুলিশ।
উল্লেখ্য, ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের নবি মহম্মদের ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করায়, ফ্রান্সের এক স্কুল শিক্ষকের শিরোচ্ছেদ করে চেচেন বংশোদ্ভূত এক কট্টরপন্থী জঙ্গি। এর পরেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রন ফ্রান্সের নাগরিকদের ইসলাম ধর্মাবলম্বই মানুষদের থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয় সেই সাথে ঘোষণা করেন যে ফ্রান্সে ব্যঙ্গাত্মক চিত্র প্রদর্শন কোনো দিন বন্ধ করা হবে না। সেই সাথে ইতিহাসের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটিকে হত্যা এবং শিরচ্ছেদ করার প্রতিক্রিয়ায় কট্টর ইসলামের বিরুদ্ধে ফরাসী সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের প্রতিক্রিয়ার বিরুদ্ধে ইসলামপন্থী দেশ গুলোকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তুর্কি ও পাকিস্তান। এবার ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে শনিবার বাংলাদেশের মতই কলকাতার আলিপুর সন্তোষ রায় রোডের ফ্রান্স কনসুলেটের সামনে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে দেখা গেল। যদিও কনসুলেটের প্রায় ২০০ মিটার আগে কলকাতা পুলিশ তাঁদেরকে আটকে দেয়।
সূত্রের খবর শনিবার এই মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা মূলত এসেছিল, ফ্রান্স কনসুলেটে এসে তাদের একটি ডেপুটেশন জমা দেওয়ার জন্য। কিন্তু তাঁদেরকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা জোর করে ঢুকতে চাইলে পুলিশ আটকায়। তারপর সেখানে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভকারীরা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়।
প্রসঙ্গত, কট্টর ইসলামের বিরুদ্ধে ফরাসী সরকার কঠোর পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে মসজিদ-সংগঠন বন্ধ, বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি,সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া নজর এবং একাধিক তদন্ত। মূলত পাশবিক কায়দায় নৃশংস হত্যার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স। শুধু প্যাটি নন, গত পরশু ফ্রান্সের নিস শহরের একটি গির্জার সামনে এক কট্টরপন্থী ইসলামী জঙ্গি দুজন সাধরণ নাগরিকের শিরোচ্ছেদ করে। পর পর এ ধরণের ঘটনা বাড়তে থাকায় ফ্রান্স কঠোর হতে বাধ্য হচ্ছে।
ফ্রান্সের এই কঠোর মনোভাব ভালভাবে নেয়নি রাশিয়া আর তুর্কি। তারা বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক ভাবে ফ্রান্সের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। সেই সাথে বিশ্বের বিভিন্ন অংশে পালা করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠিত করছে। ভারতের মুম্বাই এ গতকাল এরকম পোস্টার দেখতে পাওয়া গিয়েছিলো আর আজ সেই বিক্ষোভ এর আঁচ এসে পড়লো কলকাতার মুসলিম সম্প্রদায়গুলির মধ্যেও। যদিও ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এই বিষয়ে ফ্রান্সের পাশেই আছেন বলে অনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানান হয়েছে।