দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: রাজনীতি হোক বা সমীক্ষা, মিসড কল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সাফল্য এসেছে, আর এবার এই একই কায়দায় যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য পৌঁছে দিতে উদ্যোগী কলকাতা বিমানবন্দর। হ্যাঁ, এবার একটা মিসড কলেই ‘ট্যাক্সি’ সমস্যার মুশকিল আসান। ট্যাক্সি পেতে না দিতে হবে লাইন না করতে হবে ভাড়া নিয়ে তর্ক। বিভিন্ন বয়সী বিশেষ করে প্রৌঢ় বিমানযাত্রীদের সুবিধার্থে নতুন উদ্যোগ নিল কলকাতা বিমানবন্দর কতৃপক্ষ। তাদের আশা কোভিড আবহে যাত্রীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা আরও সুনিশ্চিত হবে।
বিমান বন্দরে নামার পর লাগেজ নিয়ে অযথা ছোটাছুটি, ট্যাক্সি চালকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা সহ নানান ঝামেলার ছবি নিত্যদিনের দৃশ্য। তবে এবার দমদম বিমানবন্দরে যাত্রীদের সুবিধার্থে এরকমই একটি মসৃণ ট্যাক্সি বুকিং ব্যবস্থা চালু করল বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। তাদের সাথে যৌথ উদ্যোগে রয়েছে কলকাতা বিমানবন্দর। ফলে এখন থেকে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর প্রিপেইড ট্যাক্সি বুক করার জন্য যাত্রীদের আর লাইনে দাঁড়াতে হবে না। একটা মিসড কল আর তাতেই কাজ হাসিল।
বিধাননগর কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগেড় পক্ষ থেকে একটি ফোন নম্বর বিমান যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে। নম্বরটি হল–৭৪৩৯৭৫১৮৫৫। এই নম্বরে দমদমে অবতরণ করা বিমানযাত্রীদের মিসড কল দিতে হবে। তারপর সেই নম্বরে পুলিশের পক্ষ থেকে এসএমএস মারফত জানিয়ে দেওয়া হবে টাইম স্লট। সাথে একটি ওটিপি দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ে প্রিপেইড ট্যাক্সি কাউন্টারে এসে ওটিপি নম্বরটি বললে ন্যায্য মূল্যে গাড়ি ভাড়া পেয়ে যাবেন ওই যাত্রী।


বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বয়স্ক মানুষ অথবা যাঁরা প্রথমবার কলকাতা বিমানবন্দরে আসছেন, তাঁদের সবার জন্যই মিসড কল দেওয়া অনেক সুবিধাজনক। কলকাতায় নামা যাত্রীদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছনোর জন্য প্রিপেইড ট্যাক্সি বুথ রয়েছে। এই বুথটিকেই আরও আধুনিকীকরণ করেছে ট্রাফিক পুলিশ।
এই মিসড কল ব্যবস্থা চালুর ফলে ট্যাক্সির জন্য যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন এড়ানো যাবে। করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকবে। এছাড়াও বিমানবন্দর চত্বরে অবৈধ গাড়ি ব্যবসার কারবারিদের প্রায়ই দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। যাত্রীদের কাছ থেকে অত্যধিক ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ এমনকি মারধরের অভিযোগও রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে। এই মিসড কল ব্যবস্থা চালুর পর আর যাত্রীদের আর তাদের খপ্পরে পড়তে হবে না।
পুলিশ সূত্রে খবর, কিউ ইউ নামে একটি স্টার্টআপ সংস্থা এই মিসড কল ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। এই নয়া ব্যবস্থা যাত্রীদের জানাতে বিমানবন্দরের একাধিক জায়গায় ফ্লেক্স, হোর্ডিং ইত্যাদির মাধ্যমে প্রচার চালাচ্ছে বিধাননগর কমিশনারেট। প্রি–পেইড বুথ থেকে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ ট্যাক্সি যাত্রীদের নিয়ে যায়। চালু করার দু’দিনের মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ যাত্রী মিসড কল ব্যবস্থার সুযোগ নিয়েছেন বলে দাবি ট্রাফিক বিভাগের। অনেকের মতে অল উবেরের হাত থেকে ট্যাক্সি পরিবহন কে বাঁচানোর জন্যেই পুলিশের এই আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ, যা এক কথায় প্রশংসনীয়। এই একই সুবিধা শিয়ালদহ ও হাওড়াতে চালু হলে মানুষ আরও উপকৃত হবেন বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল।