দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: পশ্চিমবঙ্গে লোকাল ট্রেন পরিষেবা ফের চালু করার ব্যাপারে ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার রেল ও রাজ্যেরচূড়ান্ত বৈঠকের আগে ফের এক দফা বৈঠক হল আজ বুধবার। এদিনের বৈঠকে রাজ্য সরকারের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পরিবহণ সচিব ও অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে আলোচনা করেন পূর্ব রেল ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের আধিকারিকরা। এছাড়াও রেলের পক্ষ থেকে এদিন ছিলেন হাওড়া, শিয়ালদহ এবং খড়গপুরের ডিআরএম এবং পূর্ব রেলের চিফ অপারেশন ম্যানেজার।
সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ট্রেন চলাচলের জন্য কী কী প্রস্তুতি নেওয়া হবে মূলত সে ব্যাপারেই এদিন আলোচনা করা হয়। সে ক্ষেত্রে কীরকম স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (SOP) তৈরি করতে হবে, তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়। এই বৈঠকে রাজ্যের তরফ থেকে সকাল ও বিকেলের অফিস টাইমে হাওড়া ও শিয়ালদহ এই দুটি ডিভিশনে সব মিলিয়ে ২০০ টি বা তার একটু বেশি ট্রেন চালানোর জন্য রেলকে বলেছে রাজ্য। যদি তাই হয় তা হলে রাজ্যের ছোট বড় বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীদের ঢোকা এবং বেরোনো নিয়ে কী কী নির্দেশিকা থাকা দরকার তা এদিন রেলের কাছে জানতে চায় রাজ্য। একইসঙ্গে এ ব্যাপারে কিছু পরমর্শও দিয়েছে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি অফিস টাইম ছাড়া অন্য সময়ে কোন কোন রুটে মোট কটি ট্রেন চালানো হবে তার তালিকাও তৈরি করছে রেল।
উল্লেখ্য এর আগে গত সোমবারের বৈঠকে জানানো হয় লোকাল ট্রেনের করোনা আবহে পরিষেবার শুরুতে রেল একটি লোকাল ট্রেনে ৬০০ জন যাত্রী পরিবহণ করাতে চায়। কিন্তু তা নিয়েই সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এভাবে রেলযাত্রীদের সংখ্যা বা ভিড় নিয়ন্ত্রণ বিশাল বড় একটা চ্যালেঞ্জ। কারণ, ট্রেন চালু শুরু হলে সেদিকেই ঝুঁকবে বেশিরভাগ মানুষ। সেই অসংখ্য যাত্রী থেকে একটি ট্রেনে ৬০০ জন যাত্রীকে উঠতে দেওয়া এক কথায় খড় দিয়ে বন্যার জল আগলানোর মত পরিস্থিতি তৈরি হবে। আর এই জন্যে রাজ্য রেলকে সেই বিষয়টির সমাধান সুত্র বের করতে বলে ।
আজ বৈঠকে রাজ্য সরকার রেল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায়, যদি কোনও সময় ৬০০ জন যাত্রীর বেশি প্লাটফর্মে থাকে এবং ভিড় তৈরি হয় তবে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কী করণীয়?কোনও স্টেশনে যাতে ভিড় তৈরি না হয় তা আগে থেকে কি কোনওভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? এ ক্ষেত্রে রেলপুলিশ কতটা কী করতে পারবে তা নিয়েও আলোচনা হয় এদিন। তা ছাড়া বিগত কয়েকদিন ধরে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনে চড়ার এবং লোকাল ট্রেন চালু করার দাবিতে যেভাবে রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনে যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তা নিয়ে এখনও চিন্তার ভাঁজ রয়েছে রেলকর্তাদের কপালে।
রেলকর্তারা জানিয়েছেন লোকাল ট্রেন চালু করলেই তো হবে না, রয়েছে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারও। যাত্রীরা মাস্ক পরছেন কিনা, শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কিনা— এ সব রেলের হাতে না থাকলেও যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং এবং স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা রেলকে আগেই করতে বলেছে রাজ্য সরকার। এদিকে জানা গিয়েছে, কিছু স্টেশন বাদ রেখে গ্যালপিন ট্রেন চালানোর কথা ভাবছে রেল। বিনা টিকিটে রেলযাত্রা ঠেকাতে স্টেশনে স্টেশনে টিকিট পরীক্ষকের সংখ্যাও বাড়তে পারে। সেই সাথে ভিড় নিয়ন্ত্রণে স্টেশনগুলি হকারমুক্ত করার কথাও ভাবছেন রেল কর্তৃপক্ষ।