দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কলকাতা পুলিশের মানবিকতা ও উপস্থিত বুদ্ধির সাক্ষী রইল গোটা রাজ্য। আজ মঙ্গলবার, ঠিক দুপুরে বাসন্তী হাইওয়ের ওপর চৌবাগা এলাকায় টহল দেওয়ার সময়ে স্থানীয়দের একটি জটলা দেখে থেমে যায়, কলকাতা পুলিশের টহলধারী ভ্যান। সেখান থেকে নামেন তিলজলা ট্রাফিক গার্ডের অ্যাডিশনাল ওসি সৌভিক চক্রবর্তী। তিনি সেই জটলর কাছে গিয়ে দেখতে পান রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় শুয়ে এক মহিলা। সেই মহিলা অসহ্য গর্ভযন্ত্রণায় ছটফট করছেন। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রাফিক পুলিশের সামনেই ঘটনাস্থলেই একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয় ওই মহিলা।
দিনে দুপুরে মানুষে ভরা রাস্তায় এইভাবে বাচ্চা প্রসব করতে দেখে বিন্দু মাত্র দেরি করেননি তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই রক্তাক্ত ওই মা ও নবজাতককে হাসপাতালে পৌঁছনোর উদ্যোগ নেন তিনি। নিজের পেট্রোল কারেই তুলে নিয়ে চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের উদ্দেশ্যে রওয়না দেন। এর পাশাপাশি ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে লালবাজারে সব রিপোর্ট করেন।


লাল বাজারের সহায়তাতে তুরন্ত গ্রিন করিডর করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয় ওই মহিলা ও তাঁর সন্তানকে। মহিলার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রাস্তায় যেতে যেতেই সৌভিকবাবু যোগাযোগ করেন। হাসপাতালে পৌঁছনোর পরে নির্দিষ্ট বিভাগে মনোয়ারাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রও কিনে দেন। মা-ছেলে দু’জনেই এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ওই মহিলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘটকপুকুরের বাসিন্দা। তাঁর নাম মনোয়ারা বিবি। এদিন কলকাতায় রক্ত পরীক্ষা করাতে এসেছিলেন। কাজ শেষ হওয়ার পরে আত্মীয়র সঙ্গে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। এমন সময় আচমকাই তাঁর প্রসবযন্ত্রণা শুরু হয়। রাস্তাতেই পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
এই ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করেন কলকাতা পুলিশ। সৌভিকবাবু কে রাজ্যের সকল মানুষ জানিয়েছেন স্যালুট। সেই সঙ্গে ইতিহাসে আরও একবার কলকাতা পুলিশের নাম মানবতার দূত হিসেবে লেখা রইল।