দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত বৃহস্পতিবার সাতসকালে খাস কলকাতার এমএমআলি রোডে তরুণীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। তরুণীর পরিচিত শেখ সাজিদ দেহটি পড়ে থাকার কথা পুলিশকে জানায়। তারপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তরুণীর বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার করে। সেই সময় তাঁর শরীরে ছিল একাধিক ক্ষতচিহ্ন। বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন নাকি অত্যধিক নেশার টানে মৃত্যু হল একবালপুরে সাবা খানের?
তদন্ত যত গড়াচ্ছিল, ততই সেই প্রশ্ন জোরাল হচ্ছিল। চলছিল জিজ্ঞাসাবাদ। পুলিশ একটানা শেখ সাজিদকে জেরা করতে থাকে। কারণ তদন্তের শুরুতেই পুলিশের সন্দেহ তার অপরেই ছিল। অবশেষে আজ রবিবার সাবার পরিচিত শেখ সাজিদ এবং তার স্ত্রী অঞ্জু বেগমকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে শেখ সাজিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব থেকে ক্রমশই ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সাবা। যা স্বভাবতই ভালভাবে মেনে নিতে পারেনি শেখ সাজিদের স্ত্রী অঞ্জু বেগম। বুধবার রাতে শেখ সাজিদের বাড়িতে ডেকে পাঠানো হয় সাবাকে। সেই অনুযায়ী তার বাড়িতে আসেন ডাকাবুকো ওই তরুণী। তারপরই সেখানে বসে মদ্যপান করে সাজিদ ও সাবা। এর পর সেখানে আসেন সাজিদের স্ত্রী। শ্বাসরোধ করে খুন বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের অনুমান, কোনও কারণে ব্ল্যাকমেল করা হত সাবাকে। তবে ঠিক কী কারণে তাকে ভয় দেখানো হত, সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য পুলিশের হাতে এসে পৌঁছয়নি।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব ছোটবেলায় মাকে হারিয়েছেন সাবা। তাঁদের এক ভাই আছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ভাইবোনদের মা ও বউদির কাছে রেখে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে নতুন সংসার পাতেন বাবা শেখ দুলারা। পঞ্চম শ্রেণির পর পড়াশোনা করেননি সাবা। ধীরে ধীরে বিভিন্ন লোকের সাথে মিশতে শুরু করেন। সুন্দরী সাবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে এগিয়ে এসেছিলেন বহু তরুণ। বিয়েও করতে চেয়েছিলেন। বোনের বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু সংসারের দিকে না গিয়ে ক্রমে বাউন্ডুলে হতে শুরু করেন তিনি।
এরপর কুসঙ্গে পড়ে বিড়ি-সিগারেট থেকে শুরু করে ক্রমাগত মদ্যপান, গাঁজা অন্যান্য মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যোগ হয় মাদকচক্রের সঙ্গে। মাদকের নেশা ছাড়ানোর জন্য বেহালায় একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রেও বেশ কয়েকদিন রাখা হয়েছিল তাঁকে। তবে তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। সেখান থেকে ফেরার পর কলকাতাতে বান্ধবীর বাড়িতে ছিল। আর সেখানেই এই দুর্ঘটনা ঘটে।