দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া তপসিয়ার বস্তির বাসিন্দাদের কথা আমাদের সকলেরই জানা। তারা সকলেই গৃহহীন। রাজ্য সরকারের ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অধীনে তাদের নতুন করে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব ও উঠেছে।কিন্তু তা আটকে গিয়েছে জমি-জটের কারণে।
আবাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং পুর প্রশাসকমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জমি-জটের কারণে পুর এলাকায় সরকারি প্রকল্পে আবাসনের অনেক কাজ আটকে রয়েছে। ব্যক্তিগত জমি ছাড়াও সরকারি, বেসরকারি এবং ঠিকা জমিও রয়েছে। ফলে অনেক প্রস্তাবিত প্রকল্প আটকে রয়েছে। তবে ঠিকা জমি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে পুরসভা জমি ব্যবহারে অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করেছে।’’
বাড়ি বানানোর প্রস্তাব উঠলেও জানা গিয়েছে যে, ওই জমি সেচ দফতরের অধীনস্থ।তাই ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সমস্যার মুখে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইপাসের ধারে তপসিয়ার ওই বস্তিতে সম্প্রতি বিধ্বংসী আগুনে গৃহহীন হয়ে পড়েছে ৫০-৬০টি পরিবার। এর পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই তাঁদের পুনর্বাসনের জন্য উদ্যোগী হন পুর কর্তৃপক্ষ। সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্দেশ্যে দরিদ্র মানুষদের জন্য সরকারের ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অধীনে এখানে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছিল।
তবে সম্প্রতি এই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অধীনে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে মূলত সমস্যার বিষয় হয়েছে জমির মালিকানা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ‘খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে ওই জমির মালিকানা সেচ দফতরের হাতে। তাই সেই জমি হস্তান্তরিত না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কোনও স্থায়ী নির্মাণকাজ করতে পারবে না পুরসভা’। এছাড়া পুর কর্তৃপক্ষ আরোও জানিয়েছেন, ‘আপাতত কলকাতা পুর এলাকার মধ্যে গল্ফ ক্লাব, চেতলা, বাগবাজার এবং পর্ণশ্রী এলাকার কয়েকটি বস্তিতে ওই প্রকল্পের অধীনে গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে।’
তবে এই প্রসঙ্গে কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “তপসিয়ায় যেখানে আগুন লেগেছিল সেই জমি সেচ দফতরের। তাই ওই জমি হস্তান্তর না করা পর্যন্ত স্থায়ী গৃহ নির্মাণ সম্ভব নয়। শুধু এখানেই নয়, শহরের অনেক জায়গায় ফাঁকা জমি রয়েছে। কিন্তু জমি নিয়ে জটিলতার কারণেই ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প বাস্তবায়িত করা যাচ্ছে না। পড়ে থাকা জমি যদি পুরসভা বা নগরোন্নয়ন দফতরের হাতে দেওয়া হয়, তা হলে এই প্রকল্পের অধীনে অনেক জায়গায় বাড়ি তৈরি করা যেতে পারে”।