দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বৃহস্পতিবার বিজেপির বিক্ষোভের পর মাঝেরহাট ব্রিজ নিয়ে আচমকাই শুরু ‘দায়-ঠেলাঠেলি’। ব্রীজ খোলার দাবির প্রতিক্রিয়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা দাবি করেন রেলের ‘গা-ঢিলেমি’তেই এখনও এই ব্রিজ চালু করা যায়নি। যদিও আজ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পূর্ব রেল। রেলের বক্তব্য রাজ্যের সামান্য কিছু ‘অনুমতির’ জন্যই মাঝেরহাট ব্রিজের বাকি কাজ থমকে রয়েছে। আর এই প্রসঙ্গে রাজ্যকে কটাক্ষ করেছেন অমিত মালব্যও। মুখ্যমন্ত্রী মিথ্যে কথা বলছেন বলে তোপ দেগেছেন তিনি।
গতকাল মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে হাতিয়ার করে পূর্ব রেলওয়ে একটি টুইট বার্তার মধ্যমে জানিয়েছেন “রেল ওভার ব্রীজ চালু করার যাবতীয় ‘কোডাল ফর্ম্যালীটিজ’ সম্পুর্ণ হয়েছে। পিডাব্লিউডি (PWD) দপ্তর থেকে সুরক্ষা সার্টিফিকেট এসে পৌঁছলেই, রেলের তরফে সম্পুর্ণ অনুমতি দিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া অন্য কোনো বিষয় রেলের দপ্তরে ‘পেণ্ডিং’ পড়ে নেই।”
উল্লেখ্য গতকাল বাম শ্রমিক সংগঠন গুলির ডাকা ভারত বন্ধের ঝামেলার মধ্যেই মাঝেরহাট সেতু খুলে দেওয়ার দাবিতে হঠাত্ বিজেপির বিক্ষোভ শুরু হয় তারাতলা মোড়ে। যা পথ অবরোধ, পুলিশের লাঠি, গ্রেফতার ইত্যাদি দিয়ে টানটান উত্তেজনা তৈরি করে দীর্ঘক্ষণ দক্ষিণ কলকাতার ওই এলাকাকে অবরুদ্ধ করে দেয়। তবে রাজ্য সরকার নয়, কেন্দ্রের গড়িমসিতেই যে ভেঙে পড়া সেতুটির পুনর্নির্মাণে ও খুলে দিতে সময় লাগছে তা এদিন নবান্নে স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।


উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে সরাসরি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান রেলের তরফে নতুন সেতু নির্মাণে অনুমতি না দেওয়ায় মাঝেরহাট ব্রিজ সম্পূর্ণ করতে দীর্ঘ ৯ মাস বিলম্ব হয়েছে। অন্যদিকে অবিলম্বে ব্রিজ চালুর দাবিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নেতৃত্বে দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ দেখান গেরুয়া শিবিরের কর্মীরা। গতকালের এই হটাত্ বিক্ষোভের বিষয়টির ইঙ্গিত করে নাম না নিয়ে বিজেপি নেতাদের পালটা কটাক্ষও করেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্যদিকে বিজেপির বিক্ষোভ, গণ্ডগোলের প্রতিবাদে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সন্ধ্যে বলায় মিছিল করে তৃণমূল।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ৪’ঠা সেপ্টেম্বর ভেঙে পড়ে মাঝেরহাট ব্রিজ। এরপরে এটি দ্বিতীয় হুগলি সেতুর ধাঁচে গড়ে তোলা হয়েছে। ৬৫০ মিটার দীর্ঘ নতুন সেতু তৈরির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। লোড টেস্টিং ও কেবল ফিক্সিং পর্ব শেষে এখন রেলের সেফটি সার্টিফিকেটেরর জন্য অপেক্ষা চলছে। যদিও পূর্ব রেলের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের দিক থেকে বিশেষ করে PWD দপ্তর থেকে অনুমতি না মেলায় মাঝেরহাটের কাজ থমকে আছে বলেই দাবি করা হয়েছে।