25 C
Kolkata
Monday, March 20, 2023
More

    পোষ্য প্রেমীদের জন্যে সুখবর! কলকাতায় এবার পশুদের জন্য তৈরি হল ব্লাড ডেটা ব্যাঙ্ক!

    দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কলকাতায় এবার পশুদের জন্য তৈরী হলো ব্লাড ডেটা ব্যাঙ্ক। ইতিমধ্যেই ব্যাংকের কাজ শুরু করছে দক্ষিণ কলকাতার অনিল রায় রোডের একটি বেসরকারি পশু হাসপাতাল। যা কলকাতার পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক কথায় যুগান্তকারী ঘটনা।এরফলে বাড়ির কিংবা বাড়ির বাইরের পোষ্য দের জরুরি ক্ষেত্রে রক্তের অভাবে প্রাণ হারানোর মতো দুর্ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

    জানা গেছে গতকাল এখানে একটি বিড়াল ও চারটি সারমেয়র শরীরে সফল ভাবে রক্ত সঞ্চালন করা হয়েছে। এখানে অস্ত্রপচোরও হচ্ছে বলে জানা গেছে উল্লেখ্য দক্ষিণ ভারতের, তামিলনাড়ু ইউনিভার্সিটি অব ভেটেরেনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সের পর এই প্রথম কলকাতার বুকে পশুদের জন্য এই ধরনের একটি ব্লাড ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি হয়েছে।

    আরো পড়ুন:ভাত-রুটিতেই কমতে পারে ওজন! আজ জেনে নিন সেই উপায়!

    এপ্রসঙ্গে সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, “পোষ্যরা দুর্ঘটনাগ্রস্ত হলে বা অন্য কোনও কারণে ‘ব্লাড লস’ হতে পারে, সেক্ষেত্রে ঘাটতি মেটাতে মানুষের মতোই রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন হয়।কিন্তু কুকুরদের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ বেশি হওয়ায় চটজলদি ম্যাচিং করানো মুশকিল। রক্তের তথ্য ব্যংক হাতে থাকলে রক্তদাতার জন্য আর হাতরাতে হবে না। পোষ্যের মালিককে ফোন করলেই সমাধান হয়ে যাবে।ইতিমধ্যেই এখানে একটি বিড়াল ও চারটি সারমেয়র শরীরে সফল ভাবে রক্ত সঞ্চালন করা হয়েছে। পূর্ব ভারতে এমন উদ্যোগে এই প্রথম। এখানে অস্ত্রপচোরও হচ্ছে।”

    See the source image

    ডিইএ ১.১, ডিইএ ১.৭, ডিইএ ২.২ এমনই তেরোটি রক্তের গ্রুপ রয়েছে সারমেয়দের শরীরে।অ্যান্টিজেনের উপর ভিত্তি করেই হয় কুকুরদের রক্তের গ্রুপ। ডগ অ্যারিথ্রোসাইট অ্যান্টিজেন ১.১, ২.২ এগুলো সবই এক একটি অ্যান্টিজেনকে নির্দিষ্ট করে।কিন্তু এতদিন তাদের রক্তের প্রয়োজন হলে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে যে ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর’ পদ্ধতি চলতো তা ছিল সময় সাপেক্ষ।এছাড়া সবসময় তা সফল ও হতো না।এরফলে অনেক সময় গ্রহীতার শরীরে অ্যালার্জিও তৈরি হতে দেখা যায়।কিন্তু তথ্য ব্যাংক তৈরি হওয়ায় এই সমস্যা নিস্তার মিলবে বলেই জানিয়েছেন পশু চিকিৎসকরা।অপরদিকে বিড়ালের ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ নির্ধারণ করা তুলনামূলকভাবে সহজ। কারণ তাদের মাত্র চারটি গ্রুপ, এ, বি, এবি ও সি।

    উল্লেখ্য দেবলীনা দত্ত ও তথাগত মুখোপাধ্যায়ের পশুপ্রেমের কথা বাংলার মানুষের কাছে খুব একটা অজানা নয়। সারাবছর ধরে তাঁরা যেভাবে নিজেরা শত ব্যস্ততার মধ্যেও এইসব পশুদের পাশে থাকেন তা এককথায় অনস্বীকার্য।তাই কলকাতা শহরে পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে এমন একটা অভিনব উদ্যোগকে তাঁরা কীভাবে দেখছেন তা একবার দেখে নেওয়া যাক।সেইসঙ্গে থাকছে সারাবছর ধরে রাস্তার কুকুরদের জন্য লড়াই করে যাওয়া একজন সমাজসেবী তথা পশুপ্রেমী হৃতিষা দে-এর দুচার কথাও।

    এপ্রসঙ্গে অভিনেত্রী তথা সমাজসেবী এবং পশুপ্রেমী দেবলিনা দত্ত জানিয়েছেন “এটাতে প্রচুর প্রচুর হেল্প হবে।বহু কুকুরেরই যখন ব্লাডের দরকার হয় তখন কে দিতে পারবে এটা খুঁজতে খুঁজতেই অনেক সময় চলে যায়। যেহেতু এটার কোনো উপযুক্ত সিস্টেম আমাদের নেই। তো এটা যদি সিস্টেমেটিক ভাবে করা যায়। যেটা এখানে হচ্ছে বলে আমি শুনছি । অর্থাৎ ডেটা কালেক্ট করে একটা রেকর্ড করে পুরো জিনিসটা হবে। তাহলে যখনই ওদের রক্তের দরকার হবে তখন যে সময় টা নষ্ট হয়ে যায় সেটা হবে না। তবে এটার সঠিক প্রচার দরকার। এটা যে হচ্ছে সবার আরও জানার দরকার। তবে যে ভেটগুলোয় ওদের চিকিৎসা হয় তাদের এই ব্যাপারটা আরও বেশি জানা দরকার এবং একে অপরের সাথে তাদের একটা যোগাযোগ থাকা দরকার। “

    এই অভিনব উদ্যোগে উচ্ছসিত অভিনেতা তথা সমাজসেবী এবং পশুপ্রেমী তথাগত মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন “এটা একটা দারুণ উদ্যোগ। কলকাতায় পশু চিকিৎসার ক্ষেত্রে খুবই খারাপ অবস্থা।কলকাতায় যদি কোনো কুকুরের হঠাৎ একটা এক্সরে করাতে হয় সেক্ষেত্রে মানুষের হাসপাতালে যেতে হয় যেখানে মানুষের খুব একটা কাজকর্ম হয় না। কিংবা ইউএসজি করাতে হলেও সেক্ষেত্রে অপশন অনেক কম। কোথাও ওদের থেকে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা নেই।সেখানে শুধুমাত্র জীবজন্তুদের জন্য এরকম একটা ব্লাড ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি হওয়া ভীষণ কাজের এবং ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ আর প্রয়োজনীয় একটা পদক্ষেপ।

    এটা খুব সুন্দর একটা কমিউনিটি সিস্টেম। কারণ কলকাতায় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই অধিকাংশ ডাক্তার যারা নিজেদের ভেট বলে বসে আছেন তারা অধিকাংশই হাতুড়ে। এবং প্রায়শই আমাদের শুনতে হয় অমুক ডাক্তারের হাতে অমুক কুকুর মারা গেছে, অমুক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অমুক অভিযোগ রয়েছে। অধিকাংশ চিকিৎসকের নামেই বদনাম রয়েছে। যেহেতু ওরা কথা বলতে পারে না, তাই প্রচুর ডাক্তার আছে যারা ওদের নিয়ে এক্সপএরিমেন্ট করেন। আবার কিছু ডাক্তার আছেন যারা খুব ভালো কাজ করেন। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই ভালোর থেকে খারাপের পাল্লাটা ভারী।

    এখানে দাঁড়িয়ে এই ধরনের একটা উদ্যোগ দুর্ধর্ষ।এই ধরনের চিকিৎসা পরিষেবার মধ্যে দাঁড়িয়ে তারা যেটা করেছেন সেটা আসলে এই সময়ের থেকে অনেকটাই এগিয়ে।এক্ষেত্রে কোনোরকম ব্লাড এদিক ওদিক হওয়ার জায়গা নেই। অনেকসময় মানুষের ক্ষেত্রে আমরা শুনি ব্লাড চুরির ঘটনার কথা শুনি এক্ষেত্রে তেমন কোনো জায়গাই থাকছে না।কারণ ডোনার এবং যে নিচ্ছে তাদের দুজনকে সরাসরি কানেক্ট করা হচ্ছে।তাই এক্ষেত্রে আগে থেকে ব্লাড সংগ্রহ করে রাখার ব্যাপার থাকছে না তাই কোনো রকম অনৈতিক কাজ, অসামাজিক কাজ করার পরিধি টা অনেক কম। “

    অপরদিকে সারাটা বছর তথাকথিত রাস্তার কুকুরদের নিয়ে যে অক্লান্ত পরিশ্রম করেন হৃতিষা দে তা শুধু ভালো নয় এককথায় অতুলনীয়।এপ্রসঙ্গে তিনি বলছেন”ভীষণ ভালো একটা উদ্যোগ।রাস্তার কুকুর হোক কিংবা বাড়ির কুকুর, এমন প্রচুর কুকুর আছে যারা হিমোগ্লোবিনের অভাবে কষ্ট পায়। কারণ ওদের জন্য সেরকম কোনো ব্যবস্থা নেই।তো ওদের ব্লাড খুঁজে পেতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। আর শেষ খুঁজে পাওয়া গেলেও ততক্ষণে হয়তো অনেক দেরী হয়ে যায়। ফলে কুকুরটা মারাও যায়।প্রত্যেক বছর রক্তের অভাবে কুকুরের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তো এই অসহায় অবোলা প্রাণী গুলোর জন্য এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভীষণভাবে সাহায্য করবে। “

    Related Posts

    Comments

    LEAVE A REPLY

    Please enter your comment!
    Please enter your name here

    সেরা পছন্দ

    সরে গেল ‘এটিকে’ , পরের মরশুমে ঝড় তুলতে আসছে ‘মোহনবাগান সুপার জায়ান্টস’

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে বড় ঘোষণা করলেন সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। মোহনবাগানের নামের শুরু থেকে সরে গেল...

    ভারতসেরা ‘মোহনবাগান’ ! বাঙালির গর্বের দিন

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : চাপ বনাম পাল্টা চাপ। পেনাল্টি বনাম পাল্টা পেনাল্টি। অফুরান দৌড় আর স্কিলের ফুলঝুরি দেখাতে...

    ISL চ্যাম্পিয়ন এটিকে মোহনবাগান

    দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : আই এস এল ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস জয় ছিনিয়ে নিলো এটিকে মোহনবাগান । বেঙ্গালুরু এফসিকে টাইব্রেকারে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হলো...

    বাড়িতে আনুন বেশকিছু হোমিওপ্যাথি ঔষধ , পাবেন বহু সমস্যা মুক্তি

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : হোমিওপ্যাথি এক পুরনো চিকিৎসা পদ্ধতি। আয়ুর্বেদের সঙ্গেও এই চিকিৎসা পদ্ধতির বেশ কিছু মিল...

    বড় বড় মার্কিন ব্যাংকের পতন ! আসছে মহামন্দা ?

    দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো : সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক এবং সিগনেচার ব্যাঙ্ক – পর পর দুই বড় মাপের মার্কিন ব্যাঙ্কের...