দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: কোভিড-১৯ মানুষের সাধারণ জীবন আর অর্থনৈতিক জীবনের ওপর যতটা প্রভাব ফেলেছে ঠিক ততটাই প্রভাবিত করেছে শিক্ষার্থীদের জীবনকেও। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বিগত ৪-৫ মাস ধরে টানা বন্ধ। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের উচ্চমাধ্যমিক কাউন্সিল শেষের দুটি পরীক্ষা নিতে পারেন নি। ফলে যারা একাদশ-দ্বাদশে সায়েন্স নিয়ে পড়েছিল তারা কেউই ফিজিক্স-কেমিস্ট্রি পরীক্ষা দিতে পারে নি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের যাতে বছর-লস না হয় সে জন্যে ওই পরীক্ষা দুটি বাতিল করে তড়িঘড়ি ফলাফল জানিয়েছে কাউন্সিল।
যদিও পরীক্ষার চুড়ান্ত ফলাফলে দেখা গিয়েছে ফিজিক্স-কেমিস্ট্রি তে শিক্ষার্থীরা ভুরি ভুরি নম্বর পেয়েছে। আসলে কাউন্সিল এই দুই বিষয়ে শিক্ষার্থীরা অন্যান্য যে বিষয়গুলোতে সব থেকে বেশি নম্বর পেয়েছে সেখান থেকে দুটো বিষয়ের নম্বর হুবহু বসিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এতে চুড়ান্ত মূল্যায়ণে রয়ে গিয়েছে খামতি।
আর সে বিষয়কে কেন্দ্র করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন কমিটির সিদ্ধান্ত ফিজিক্স,কেমিস্ট্রির মত বিষয়গুলিতে অনার্স নিয়ে পড়তে গেলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে অন্তত ফিজিক্স, কেমিস্ট্রিতে প্রাপ্ত নম্বর বিচার করা হবে না!
যেহেতু এবারে করোনা আবহে অ্যাডমিশন টেস্ট বা প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় তাই ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি অনার্স নেওয়ার ক্ষেত্রে এক নতুন নিয়ম জারি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিশন কমিটি। এই নয়া নিয়মে ফিজিক্স কেমিস্ট্রি অনার্স নিয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত মোট নম্বর, অঙ্কে প্রাপ্ত নম্বর এবং সেই সাথে মাধ্যমিকের ভৌতবিজ্ঞান বা জীবন বিজ্ঞান এবং তার সঙ্গে মাধ্যমিকের মোট প্রাপ্ত নম্বর যাচাই করে দেখা হবে। বলা যেতে পারে ধাপে ধাপে মূল্যায়ণের ফল নিরীক্ষণ করে চুড়ান্ত মেরিট লিস্ট টাঙ্গানো হবে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি সংক্রান্ত নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে। আগামী ১৪ অগাস্ট থেকে ছাত্রছাত্রীরা অনলাইনে ফর্ম তুলতে ও জমা দিতে পারবেন। শুধু ফিজিক্স, কেমিস্ট্রির মতো বিষয়গুলি নয়, কলা বিভাগেরও বেশ কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে একই নিয়ম কার্যকর করা হচ্ছে। বিশেষত ইকোনমিক্স, ভূগোলের ক্ষেত্রে এই নিয়মের পথেই হাঁটছে বিশ্ববিদ্যালয়।
অনলাইন এ অ্যাডমিশন এর যাবতীয় তথ্য পেতে ক্লিক করুন
এই নতুন নিয়ম প্রবর্তনের প্রসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন বা জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম রায় জানিয়েছেন যে মানের সঙ্গে যাদবপুর কখনোই আপস করে না। আর সেকারণেই অ্যাডমিশন টেস্ট বা প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। এবছর করোনা মহামারীতে পরিস্থিতি অনুকূল নয় বলেই বেশ কয়েকটি বিষয়ের ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু নম্বর দিয়ে শিক্ষর্থীকে যাচাই করলে হবে না তাদের মেধাও যাচাই করা প্রয়োজন।”
তবে এ নিয়ম শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের বোর্ড থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্যে। দিল্লি বা অন্য রাজ্যের বোর্ড থেকে পাস করা ছাত্রছাত্রীদের জন্য পুরোনো নিয়ম বলবত্। যেহেতু সিবিএসই এবং আইএসসি-তে ফিজিক্স,কেমিস্ট্রি পরীক্ষা হয়েছে এবং সেই পরীক্ষার মূল্যায়ন হয়েছে তাই এই দুই বোর্ডের ক্ষেত্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।