দ্যা ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বিগত বেশ কিছু দিন ধরেই করোনা আবহে বেসরকারী স্কুল গুলোর বর্ধিত ফি নিয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির সাথে অভিভাবকদের সংঘাত চরমে ছিল। দফায় দফায় রাস্তা অবরোধ, স্কুল গেট বন্ধ করে রেখে অভিভাকরা আন্দোলনে নেমেছিলেন। সেই সংঘাত গড়িয়েছে হাই কোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু আজ হাই কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছে ১৫’ই আগস্টের মধ্যেই বেসরকারি স্কুলগুলিতে অভিভাবকদের বকেয়া ফি-র ৮০% মিটিয়ে দিতে হবে। এ নিয়ে পূর্ববর্তী নির্দেশই বহাল রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। এর পাশাপাশি আদালত সতর্ক করেছে এই মামলার কোনও নথি ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়ায় পাবলিশ করা যাবে না।
বিচারপতি সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এ এই মামলার শুনানি হয়। অভিভাবক ফোরামের পক্ষ থেকে মামলাকারী ছিলেন বিনিত রুইয়া। সোমবার রুইয়ার আইনজীবী বকেয়া ফি মিটিয়ে দেওয়ার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানান কোর্টে। কিন্তু সেই আবেদনে খারিজ করে দেন বিচারপতি দ্বয়। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যেই বকেয়া ফি-র ৮০ শতাংশ মিটিয়ে দিতে হবে। এর পাশাপাশি এর মধ্যে কোনও ছাত্র ছাত্রীকে অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না বলেও স্কুল কতৃপক্ষকে মনে করিয়ে দিয়েছে আদালত।
উল্লেখ্য, কলকাতা ও রাজ্যের বেসরকারি স্কুলগুলিতে টিউশন ফি ছাড়াও অন্য বিভিন্ন খাতে পড়ুয়াদের কাছ থেকে বিপুল অংকের টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু এই মহামারীর সময় লকডাউনের জেরে প্রত্যেক পরিবারেরই অর্থনৈতিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছে। তাই বিশেষ বিশেষ বিভাগ বাদে বাড়তি টাকা যাতে না নেওয়া হয় এমনই দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন প্রায় ১৫ হাজার পড়ুয়ার অভিভাবক। জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের হয় কল্যাণ ভারতী ট্রাস্ট (হেরিটেজ স্কুল), অশোকা হল স্কুল গোষ্ঠী, অ্যাডামাস ইন্টারন্যাশনাল এবং বিড়লা স্কুলকে কেন্দ্র করে। এরপর একে একে মোট ১১২টি স্কুলকে এই মামলায় যুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।
অন্যদিকে হাইকোর্টের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আদালতে জানানো হয়েছিল যে এই স্কুল ফি এর ব্যাপারে রাজ্যসরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাজ্যসরকারের তরফ থেকে মহামারী আবহে বিভিন্ন সময়ে একাধিক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যে বিজ্ঞপ্তিগুলিতে বেসরকারি স্কুল গুলিকে ফি বৃদ্ধি থেকে বিরত থাকা ও ফি ছাড় দেওয়ার ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছিল।
এখন হাইকোর্টের এই রায়ে অভিভাবকদের অধিকাংশই যে খুশি নয় তা বলাই বাহুল্য।