দ্য ক্যালকাটা মিরার ব্যুরো: করোনার দাপটে মানুষ তো মানুষ, রক্ষে পাচ্ছে না স্বয়ং মা দুর্গাও। মোটে কিনা একবার বাপের বাড়ি আসেন মা,তাতেও তাকে মানতে হবে ‘ সামাজিক সর্তকতা’!
বিষয়টা খুলেই বলা যাক। সুদূর অতীত থেকেই কলকাতার বনেদি ঠাকুর মূর্তি তৈরি হতো একচালার আদলে, এক চালায় আসতেন মা দুর্গা সাথে তাঁর ছেলে মেয়ে। কিন্তু এবারে করোনা পরিস্থিতি সেই এক চালার চিত্রও বদলে দিয়েছে অনেকটাই।
বাঙালির আবেগ জড়িত যে ক’টি বনেদি জমিদার বাড়ি মহানগরীতে অবস্থান করছে ,তাদের মধ্যে শোভাবাজার রাজবাড়ির নাম অন্যতম। সুপ্রাচীন চিরাচরিত ঐতিহ্যের একান্নবর্তী পরিবারে মা পূজিত হতেন একচালা কাঠামোর আদলে। কিন্তু করোনার জেরে এই বছরে শোভাবাজার রাজবাড়ির ছবিটা একেবারেই বদলে যাবে এমনটাই জানাচ্ছেন রাজবাড়ী কর্তৃপক্ষ।




এবারে শোভাবাজার রাজবাড়িতে, মায়ের মূর্তি তৈরি হচ্ছে, সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই। পটুয়া জানালেন এবার প্রত্যেক মূর্তির মধ্যে থাকবে প্রায় এক ফুটের দূরত্ব। রাজ বাড়ির সদস্যরা মায়ের এই রূপের মাধ্যমে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং’ এর বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছেন মানুষের কাছে।
তবে শুধু মূর্তি নয়, চিরাচরিত রীতির বদল হচ্ছে পুজো সহ মিষ্টি এবং বিসর্জনের ক্ষেত্রেও। পুজোর দিনগুলিতে রাজ বাড়ির দালানে আলাদা আলাদা পাঁচ রকমের মিষ্টি তৈরি করতে বাইরে থেকে আনা হতো ময়রাদের কিন্তু এ বছরে করোনার জেরে তা আর হবে না।
এমনকি ঢাকের বাদ্যিও বাজবে ডিজিটাল মাধ্যমে। পুজোয় মিডিয়া কভারেজ এর ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। রাজবাড়ী সূত্রে খবর, পূজোর সমস্ত ছবি আপডেট হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মিডিয়ার কাছে পৌঁছাবে।
যে শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রতিমা বিসর্জন দেখতে রীতিমতো গঙ্গার ঘাটে মানুষের ভিড় জমে যায়। এবছর সেই বিষয়টাও আর থাকছে না। বিসর্জনে ভিড় একেবারেই নিষিদ্ধ। এই বিধিনিষেধের চক্করে দৈনন্দিন জীবনের পাশাপাশি এবার বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবেও যে করোনা প্রভাব বিস্তার করেছে তা বলাই বাহুল্য।