দ্য ক্যালকাটামিরর ব্যুরো: অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শুরু হয়ে গেল গঙ্গার নীচে মেট্রোর সুড়ঙ্গে লাইন পাতার কাজ। হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড অবধি চলছে এই লাইন পাতার কাজ। করোনা প্রটোকল মেনে গত জুলাই মাসেই অস্ট্রিয়া থেকে কলকাতায় এসে পৌঁছে গিয়েছে ইস্পাতের রেল। লাইন বসানোর জন্য এসে গিয়েছে আমেরিকান মেশিন ‘মোবাইল ফ্ল্যাশব্যাট ওয়েল্ডিং’,যা দিয়ে জোড়া করা হচ্ছে লাইনের বিভিন্ন অংশবিশেষ।
কে এম আর সি এল (KMRCL) -সূত্রে খবর হাওড়া ময়দান থেকে শিয়ালদহ অবধি ৭ কিমি লাইন পাতার মতোই ইস্পাতের লাইন ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছে গিয়েছে। আপাতত তা রাখা আছে হাওড়া ময়দান ও সুভাষ সরোবরের মেট্রোর কাস্টিং ইয়ার্ডে। যে সকল সংস্থা এই লাইন পাতার কাজ করবেন তাদের প্রতিনিধিরাও কোভিড প্রটোকল মেনেই জোর কদমে কাজে লেগে পড়েছেন। তাঁদের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যেই এই কাজ শেষ করার। তবে এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহ অবধি সুড়ঙ্গের কাজ শেষ না হওয়ায় দু-প্রান্ত থেকে লাইন পাতার কাজে একটা সমস্যা দেখি গিয়েছে, এই কারনেই একটু বেশি সময় লাগবে।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড অবধি গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রোর সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ শেষ। তাই এই অংশে গঙ্গার নীচেই রেল লাইনের পাত বসানোর কাজ শুরু হল। কাজের জন্য অস্ট্রিয়া থেকে আনা হয়েছে ১৭১০ মেট্রিক টন ইস্পাত। ১৮ মিটার করে লম্বা এক একটি রেলের খন্ড, আর এগুলিকেই এখন জোড়া করার কাজ চলছে।
কে এম আর সি এলের (KMRCL)-র জিএম ইলেকট্রিকাল নরেশ চন্দ্র কারমালি জানিয়েছেন, “মেট্রো লাইনে কোনও জয়েন্ট থাকে না। তাই প্রতিটি খন্ড বসিয়ে বিশেষ যন্ত্র মোবাইল ফ্ল্যাশব্যাট ওয়েল্ডিং দিয়ে জোড়া হবে। তারপর বিভিন্ন তাপমাত্রায় তা পরীক্ষা করা হবে”। কে এম আর সি এলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ‘মেট্রো লাইন হয় মাটির নীচে সুড়ঙ্গতে নয়তো মাটির অনেক ওপরে। ফলে এখানে লাইন বদলানো খুব একটা সহজ ব্যপার নয়। তাই কমপক্ষে ১০০ বছর ধরে পরিষেবা দিতে হবে এমনটা ভেবেই এই রেল বা ইস্পাত নিয়ে আসা হয়েছে। আর এই ইস্পাত দিয়েই চলছে কাজ”।
কে এম আর সি এল সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, ‘ভিয়েনার নদী বন্দর থেকে জাহাজে করে কলকাতা বন্দরে নিয়ে আসা হয়েছিল এই ইস্পাত। ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ সহ নানা উপকরণ দিয়ে তৈরী এই ইস্পাত। সাধারণ লাইনের চেয়ে এই লাইনের পীড়ন সহ্য করার ক্ষমতা অনেকটা বেশি। বিশেষ প্রযুক্তিতে বানানো এই ইস্পাত কয়েক মিনিট অন্তর অন্তর ট্রেন চলাচলের পরেও কোনরকমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তাই দাম বেশি হলেও একেই বাছাই করেছে কে এম আর সি এল। যেহেতু অস্ট্রিয়া রেল লাইন তৈরিতে দক্ষ তাই সেখান থেকেই এই ইস্পাত আনা হয়েছে।