দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: অন্যান্যবারের থেকে এবারের পুজোটা অনেকটাই ভিন্ন। বিগত বছরগুলোতে এসময় কলকাতার মুখ মুড়ে ফেলা হতো পুজোর হোডিং, কাট-আউটে, পোস্টারে। সেই সাথে আকাশে শরতের পেঁজা তুলোয় আঁকা হালকা মেঘ, কাঁশবনে উঁকি মারতো কাঁশ ফুল। কিন্তু এখন শরতের আকাশ উঁকি মারতে শুরু করলে, কাঁশ ফুল মাথা দোলালেও মহানগরীতে পুজোর কাউন্টডাউন কিন্তু এগোচ্ছে ভিশনই ঢিমে-তালে। একটাই কারণ, করোনা ভাইরাস।
যদিও করোনার জেরে অনেক পুজো কমিটির প্যান্ডেলের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই যেমন দক্ষিণ কলকাতার চেতলা। এই চেতলা’র অগ্রণী ক্লাবটি হলো কলকাতার নাম করা পুজো কমিটি গুলির মধ্যে অন্যতম। কলকাতায় দুর্গা পুজোর ব্লকবাস্টার প্যান্ডেলের মধ্যে অন্যতম চেতলা। উদ্যোক্তাদের দাবি, ‘চেতলা অগ্রণীর পুজো না দেখলে না কী কলকাতার দুর্গাপুজোর আসল স্বাদটাই পাওয়া যায় না। তবে যে যাই বলুক, কোভিড-১৯ আবহেও পুজোর কাজে হাত লাগিয়ে ফেলেছে চেতলা ‘অগ্রণী’।
এবারে চেতলা অগ্রণীর দুর্গা পুজো ২৮তম বর্ষে পা দিল। দক্ষিণের এই পুজোতে উৎসবের দিনগুলোতে হাজার ছাপিয়ে লক্ষের দিকে এগোয় লোক সমাগম। করোনা আবহে চেতলার পুজোর আয়োজনের খোঁজখবর করতেই সেখানকার ক্লাবের সদস্যরা বলছেন, তাদের পুজোর বাজেট অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে নিতান্তই কম। ছয় ভাগের এক ভাগ মাত্র। অর্থাৎ অন্য বার ৩০ লক্ষ টাকার পুজো হয়ে থাকলে এবার পুজোর বাজেট বেঁধে রাখার চেষ্টা হচ্ছে ৫ লক্ষে।
চেতলা অগ্রণীর সভাপতি এবং রাজ্যের কলকাতা পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন ফিরহাদ ববি হাকিম। তাই কোভিড আবহে সরকারি বিধিনিষেধ মেনেই পুজা উদযাপনে বিশেষ সতর্কতা নিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। ঐ ক্লাবের সদস্য ও পুজোর অন্যতম কর্তা ইয়াসির হায়দার বলছিলেন, “অন্যবারের সঙ্গে এবারের পুজো মেলানো যাবে না। কোভিড সতর্কতার জন্য সব ক্ষেত্রে কাটছাঁট করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মাঠের বাইরে থেকেই দেবী দর্শন করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।”
এবারের শিল্পী অনির্বাণ দাস। তাঁর পরিকল্পনা এবং রুপায়নে এবারে চেতলার থিম কবিগুরু রবি ঠাকুরের কবিতা অবলম্বনে ‘দুঃসময়’। সময়ের সঙ্গে তাৎপর্যপূর্ণ থিম। ক্লাবের সদস্য আদিত্য দাস ও সৃঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রথের সময়ে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রার দিন খুঁটি পুজোর মাধ্যমে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। এবার সেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে অগাস্টের একদম শেষে। বললে বিশ্বাস করবেন না, এই মুহূর্তে মাত্র ৯ জন কর্মী মাঠে মণ্ডপ নির্মাণের কাজ করছেন।” সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে জনজীবনের মতই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবেও প্রভাব ফেলেছে এই করোনা ভাইরাস।
ছবি প্রতীকী