দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: এই শেষ বর্ষার খামখেয়ালী মরশুমে খিচুড়ী আর ইলিশ ভাজার স্বপ্নপূরণ আর বৃথা নয়। আসন্ন দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা স্বরূপ সোমবার সন্ধ্যায় দুটি ট্রাকে ১২ টন ইলিশ ঢুকল এপার বাংলায় পেট্রাপোল স্থল বন্দরে। বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছিল ভারতে ১৪৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করবে বাংলাদেশ। মন্ত্রক জানিয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানিকারকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই অনুমতি।
উল্লেখ্য, গত, ২০১২’র জুলাই মাস থেকে ভারতে ইলিশ রফতানি করার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। পশ্চিমবঙ্গে পদ্মার ইলিশ রফতানি করার ওপর থাকা নিষেধাজ্ঞা সাময়িক ভাবে ২৮ দিনের জন্যে প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার। আর তারপর পরই সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য ঢুকছে বাংলাদেশের ইলিশ। প্রসঙ্গত, ২০১১-র পর থেকে এই বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশী ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে আসার ঘটনা এই প্রথম।
যে কটি বাংলাদেশি সংস্থা ভারতে ইলিশ মাছ রফতানি করার অনুমতি পেয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম সেভেন স্টার ফিশিং প্রসেসিং লিমিটেড। এই সংস্থার বিবৃতি অনুযায়ী ‘বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী মোট ৯টি কোম্পানিকে পশ্চিমবঙ্গে ১৪৫০ টন ইলিশ রফতানি করার অনুমতি দিয়েছেন। ১০ অক্টোবরের মধ্যে পুরো রফতানির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে ফেলতে হবে। কারণ ১২ অক্টোবর থেকে ফের পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের ইলিশ রফতানির ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়ে যাচ্ছে।’


হাওড়া হোলসেল ফিশ মার্কেট সূত্রে খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আমদানিতে অনুমতি দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। পেট্রাপোল শুল্ক দফতর সূত্রে আজ সোমবার সকালেই সেই ইলিশ আমদানিতে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতি চলে এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের বাজারে ভালো জাতের ইলিশের দেখা নেই! এই রাজ্যের মত্স্যজীবীদের জালে এই বছর ইলিশ প্রায় ধরা পড়েনি বললেই চলে। কিন্তু কিছুটা হলেও উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে বাংলাদেশে। সেখানে এই আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ জালে ধরা পড়ায় ইলিশের দাম কমেছে অনেকটাই। সেই কারণেই পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশের মত্স্য ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদনেই সাড়া দিয়ে নিষেধাজ্ঞা সাময়িক ভাবে প্রত্যাহার করে নিল বাংলাদেশ।
প্রসঙ্গত, গত বছরও পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রফতানিতে সামান্য ছাড় দিয়েছিল ঢাকা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যোগ দিতে গত বছর এ দেশে আসার আগে ৫০০ টন ইলিশ পাঠানো হয়েছিল। যে বিষয়টিকে বিশেষজ্ঞরা ‘ইলিশ-কূটনীতি’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। যদিও বাংলাদেশ থেকে আসা ইলিশের ওজন ১ কিলোগ্রামের মধ্যেই তবে বাজারের চাহিদা ও যোগানের ঘাটতি থাকায় এই ইলিশই হয়তো কলকাতা ঘুরে রাজ্যের বাজারে চড়া দামে বিক্রি হবে। তবে পেটপুজোর পূজারীদের কাছে পদ্মার ইলিশের কাছে পকেট কিছুই নয়, এখন শুধু অপেক্ষা মেনু ঠিক করার।