দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গত কাল কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে পারবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ। কোর্ট জানিয়েছে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নির্ধারিত শোধন পদ্ধতি মেনে দেহ জীবাণুমুক্ত করার পর তা তুলে দেওয়া যাবে পরিবারের হাতে। তবে সেক্ষেত্রেও মানতে হবে আরও একগুচ্ছ নির্দেশিকা।
গত মাসের মাঝামাঝি কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা হয়। সেই পিটিশনে লেখা হয় করোনায় মৃতদের দেহ যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে সৎকার হচ্ছে না। সেই পিটিশনে কারণ ও যুক্তি দেখিয়ে তাদের অভিযোগ নিয়ে দাবিও করা হয়। গতকাল সেই মামলার রায়ে আদালত জানিয়েছে, করোনায় মৃতের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া যাবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে।
কী রয়েছে সেই বিশেষ নির্দেশিকাতে:
ক) ময়নাতদন্তের প্রয়োজন না হলে তবেই করোনায় মৃত ব্যক্তির দেহ পরিবারকে দেওয়া যাবে।
খ) একমাত্র ছেলে, মেয়ে, স্ত্রী, স্বামী, বাবা বা মায়ের মতো ঘনিষ্ঠ আত্মীয়কেই মরদেহ হস্তান্তর করতে হবে।
গ) দেহ রাখতে হবে বিশেষ শবদেহবাহী ব্যাগে। তার মুখের দিকটা স্বচ্ছ প্লাস্টিকের হতে হবে।
ঘ) এমনকি মরদেহ ব্যাগে রাখার পর ব্যাগের বাইরের দিকটা যথাযথভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
ঙ) শবদেহ বাড়ি বা জনবহুল যায়গায় নেওয়া যাবে না। হাসপাতাল থেকে সোজা নিয়ে যেতে হবে শ্মশানে।
চ) শবদেহ যাঁরা বহন করবেন তাঁদের করোনা প্রতিরোধী উপকরণ (PPE) ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক।
ছ) শ্মশানে দেহ পৌঁছনোর পর সেই শবদেহবাহী গাড়ি জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
জ) শবদেহ যাঁরা সৎকার করবেন তাঁদেরও উপযুক্ত সুরক্ষা নিতে হবে।
ঝ) শবদেহকে কেন্দ্র করে শ্মশানে সামাজিক ও ধর্মীয় আচার পালন করা যাবে। তবে খালি হাতে দেহ ছোঁয়া যাবে না।
ঞ) পরিজনরা চাইলে শবদেহবাহী ব্যাগের মুখটি খুলে মৃত ব্যক্তির মুখ দেখার সুযোগ করে দিতে হবে। দেহ সৎকার শুরু আগে এই কাজটি করবেন সৎকারের কাজে নিযুক্ত কর্মীরা।
ট) সৎকার শেষে সৎকারে যুক্ত কর্মীদের হাত পা ও PPE স্যানিটাইজ করতে হবে।
ঠ) শ্মশানে অহেতুক ভিড় করা যাবে না।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে এই নির্দেশিকার পাশাপাশি রাজ্য সরকার বা সংশ্লিষ্ট পুরসভা বেশ কিছু অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা আরোপ করতে পারে। জনসুরক্ষার কথা মাথায় রেখে সেই সুযোগ বহাল রাখল হাইকোর্ট।