দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে ১৯ বছরের দলিত কন্যাকে ধর্ষণ করে খুন এবং পরে পরিবারের অনুমতি ছাড়াই তার দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দল। আমাদের রাজ্যও ব্যতিক্রম নয়, এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও জনমত গড়ে তুলতে আজ শনিবার কলকাতার রাজপথে নামছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু এই ঘটনার প্রতি প্রতিবাদ নয় এর পাশাপাশি শুক্রবার হাথরাসে তৃণমূল সাংসদদের প্রতিনিধি দলকে পুলিশের বাধা দেওয়া এবং তাঁদের হেনস্থা করার ঘটনারও নিন্দা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী।
দলীয় সূত্রে খবর, আজ শনিবার কলকাতায় তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ময়দান চত্বরে বিড়লা তারামণ্ডলের সামনে থেকে এই মিছিল শুরু হবে। আর তা শেষ হবে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এসে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে, তাঁদের সমবেদনা জানাতে হাথরাসে পৌঁছে গিয়েছিলেন তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। ওই দলে ছিলেন সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল ও মমতাবালা ঠাকুর। অভিযোগ, পুলিশ সেখানে তাঁদের শুধু বাধাই দেয়নি, রীতিমতো হেনস্থা করেছে । পুরুষ পুলিশের বিরুদ্ধে মহিলা সাংসদদের গায়ে হাত দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর ও প্রতিমা মণ্ডল। ওদিকে, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির সময় মাটিতে পড়ে যান ডেরেক ও’ব্রায়েন। কাকলি ঘোষ দস্তিদারের অভিযোগ, ডেরেককে ঠেলে ফেলে দিয়েছে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ।


স্বাভাবিকভাবেই দলীয় সংসদদের এই রকম হেনস্থার ঘটনায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ, তাঁর নির্দেশেই ওই প্রতিনিধি দল হাথরাসে পৌঁছন। সেই ঘটনার নিন্দা জানিয়েও প্রতিবাদ মিছিলে মমতা আওয়াজ তুলবেন বলেও জানা গিয়েছে।
এর আগে তিনি বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির এক প্রকল্প উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে হাথরাসের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সীতা মাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল। আর আজ দেখুন উত্তরপ্রদেশে শুধু ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের পর আগুনে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়েও দেওয়া হল। যদি কোনও অপরাধ হয় পুলিশের উচিত দ্রুত তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া। আমরাও করেছি। আমাদের রাজ্যে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধী ধরা পড়েছে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে ধর্ষণের পর ওই যুবতীকে পুলিশ পুড়িয়ে দিয়েছে। কোনও তদন্তও হচ্ছে না। এ কী ধরনের অপশাসন চলছে সেখানে। ওখানকার এক নেতা তো বলেছে যে মা–মেয়ে দু’জনকেই পুড়িয়ে দাও।’
যদিও বিরোধীদের দাবি, হাতরাস কে সামনে রেখে নির্বাচনের মন্ত্রেই ট্রিক্স করছেন মমতা। তাদের বক্তব্য, কামদুনি বা পার্কস্ট্রিট এর ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী তো এক পাও হাঁটেন নি। উপরন্তু ” ছোট ঘটনা” , ‘ সাজানো ঘটনা’ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন। অনেকেই মুখ্যমন্ত্রীর এই আচরণ কে ” ঘর জ্বালানি পর ভোলানি’ প্রবাদের সেহে তুলনা করেছেন। বিরোধীদের দাবি রাজ্যের জলপাইগুড়ি, সোনারপুরের ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করুক রাজ্য তারপর হাতরাসের জন্যে ‘কুম্ভীরাশ্রু’ দেখাদিক মুখ্যমন্ত্রীর চোখে।