দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: খুলে গিয়েছে সিংহভাগ অফিস, কাছারি। অথচ শহরতলি আর বাইরের জেলা থেকে কলকাতা যাতায়াতের দ্রুত , সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী উপায় সেই লোকাল ট্রেন চালু হওয়ার কোন গ্রীন সিগনালই মিলছে না। এই লোকাল ট্রেনের ওপর নির্ভর করে যারা ঘন্টার পর ঘণ্টা জার্নি করে এক জেলা থেকে আর এক জেলায় আসতেন কাজ করতে, তাদের অধিকাংশকেই এখন বদলাতে হয়েছে জীবিকা। মানুষের মনে ক্ষোভ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। রেল স্টেশনের সৌন্দর্যায়ন ঘটলিও কবে থেকে স্টেশনে আসবে মানুষ, কবে থেকে ফিরবে সেই চেনা দৃশ্য?
কবে থেকে লোকাল-সহ যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে, সে বিষয়ে এখনও স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে রেলের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে , সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের চাহিদার উপর ভিত্তি করেই ট্রেন চালানো হবে।সেইসাথে সেখানকার করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিও বিবেচনা করে দেখা হবে। এই সব কিছু খতিয়ে দেখার পরই ঠিক হবে টেন চলবে কবে থেকে।
এই প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব জানান, রাজ্য সরকারের প্রয়োজন এবং করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর বিষয়টি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল। যেহেতু লোকাল ট্রেনে লোকসংখ্যা অনেক বেশি এবং ভিড় হওয়ার ও সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি তাই রাজ্য সরকার অঞ্চল অনুযায়ী সমীক্ষা করে রিপোর্ট দিলে পরেই চলতে পারে ট্রেন, নতুবা নয়।
আরও পড়ুন: নিউ নরম্যালে এবার শিয়ালদা ডিভিশনে ছুটবে মুম্বাই লোকাল
তিনি আরও বলেন, ‘যাত্রীবাহী ট্রেনের মূল্যায়ণ প্রসঙ্গে বলতে গেলে আমরা এখন দৈনন্দিন ভিত্তিতে ট্রেনের চাহিদা, ট্রেনের ভিড় , কোন লাইনে ট্রেনের যাত্রিসংখ্যার চাপ কেমন এবং প্রতিটিই স্টেশন অঞ্চলের করোনা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করব। যেখানে অতীব প্রয়োজন রয়েছে, সেখানেই আমরা শুধুমাত্র ট্রেন চালাব।’
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে গত ২২ মার্চ থেকে দেশজুড়ে যাত্রীবাহী ট্রেন পরিষেবা বন্ধ ছিল। এর পরে ১২ মে থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১৫ জোড়া বিশেষ ট্রেন (রাজধানী) চালু করা হয়। ১ জুন থেকে আরও ১০০ জোড়া দূরপাল্লার ট্রেন দৌড়াতে শুরু করে। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়তি ৮০ টি ট্রেন শুরু হয়। পরে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ৪০ টি ‘ক্লোন ট্রেন’ চালু করে রেল। সেইসঙ্গে উৎসবের মরশুমে অতিরিক্ত ২০০ টি বিশেষ ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে রেল। বাড়তি যাত্রীর চাপ সামাল দিতে ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সেই পরিষেবা মিলবে। কিন্তু কলকাতা শহর ও সংলগ্ন জেলাগুলির লাইফলাইন লোকাল ট্রেন চালানোর কোনো সদিচ্ছা দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না রেলের তরফ থেকে বা সরকারের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন: পুজোর আগেই চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন, জল্পনা রেল ও রাজ্য দপ্তরে
কিছুদিন আগে, লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালুর বিষয়ে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেছিলেন, ‘সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার প্রস্তুত থাকলে এবং তারা যদি রেলবোর্ডকে জানায়, তবেই আমরা শহরতলিতে রেল পরিষেবা পুনরায় চালু করার কথা বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে আমাদের করোনা সংক্রমণ অনেকটা কমিয়ে আনতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই আমরা পুনরায় লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি শুরু করব।’
সুতরাং, লোকাল ট্রেনের ভাগ্য সম্পুর্ণ ভাবেই ঝুলে আছে রাজ্য সরকারের সমীক্ষা আর সবুজ সংকেতের ওপর। এই মূহুর্তে দিন আনা, খেটে খাওয়া মানুষের বক্তব্য, এই ভাবে লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখলে করোনা নয় না খেতে পেয়েই মরতে হবে। দেখা যাক পুজোর আগেই লোকাল ট্রেন চলার কোনো রকম সনুজ সংকেত মেলে কিনা সরকারের পক্ষ থেকে।