দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো:এই বছর মঠের দুর্গাপুজোয় দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করল বেলুড় মঠ কর্তৃপক্ষ। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি সেই সাথে মঠের প্রায় অধিকাংশ আবাসিক করোনা আক্রান্ত হওয়াতে মঠ কতৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ১১৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপুজোয় এই প্রথম সাধারণ মানুষ উপস্থিত থাকতে পারবেন না। উল্লেখ্য, ১৯০১ সালে স্বামী বিবেকানন্দ বেলুড় মঠে এই দূর্গা পুজোর সূচনা করেছিলেন।
কিন্তু মায়ের পূজা দেখতে না পারার আক্ষেপ যাতে ভক্তমনে তৈরি না হয়, সে কারণে প্রতিদিনই মায়ের পুজো সরাসরি দেখা যাবে মোবাইলে বেলুড় মঠের নিজস্ব ওয়েবসাইটে। লাইভ টেলিকাস্ট হবে। এছাড়া প্রতিবারের মতো দূরদর্শনও নিয়ম মেনে এই পূজার সরাসরি সম্প্রচার করবে ।
মঠ সূত্রের খবর, দর্শনার্থী প্রবেশ নিষেধ হলেও প্রত্যেক বছরের মতো এই বছরও সমস্ত আচার বিধি মেনেই পুজো হবে। তবে প্রতি বছরের মত মঠের বড় মন্দিরের (মূল মন্দির) পূর্ব দিকের মাঠে পুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এই বছর পুজো মূল মন্দিরের ভেতরেই হবে এবং প্রতিমার আকারও তুলনায় ছোট করা হচ্ছে।
জেনে নেওয়া যাক আপনার মোবাইল দিয়েই এই ওয়েবসাইটে ঢুকে কী কী দেখতে পারবেন। বেলুড় মঠ সূত্রে জানানো হয়েছে , তাঁদের এই ওয়েবসাইটে দেখা যাবে পঞ্চমীর দিনের সন্ধ্যারতি, দেবীর বোধন, ষষ্ঠীর দিন দেবীর কল্পারম্ভ আমন্ত্রণ অধিবাস। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর পুজো। অষ্টমীর দিনের সকালে কুমারী পুজো, দশমীর দিন দেবী বিসর্জন।


তবে কুমারী পুজোতে বিধি নিষেধ থাকছে না তা হবে চিরাচরিত প্রথা মেনেই, এমন কী সন্ধি পুজোও সেই নিয়ম মেনেই হবে। প্রসঙ্গত, মঠের প্রথম পুজোর দিনে স্বামীজি নিজে হাতে আটজন কুমারীকে পুজো করেছিলেন। এখনও মঠের দূর্গা পূজার বিশেষ আকর্ষণ এই কুমারী পুজোই। এই পূজাতে চার থেকে সাত বছর বয়সী এক ব্রাহ্মণ কুমারী কন্যাকে মাতৃরূপে পূজা করা হয়। শোনা যায়, স্বামীজির আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে সারদা দেবী স্বয়ং এই পূজাতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এখনও পূজাতে মাযের নামে সংকল্প করা হয়।
আগে এই পূজা মূল মন্দিরের ভেতরেই হতো। ২০০০ সাল থেকে মায়ের পুজো বাইরের মাঠে আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের জেরে মঠ বন্ধ ছিল। দীর্ঘ ৮২ দিন পরে, ১৫ জুন থেকে ফের ভক্ত ও দর্শনার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় বেলুড় মঠ। কিন্তু তার পর মঠের প্রায় শতাধিক সন্ন্যাসী ও কর্মচারী কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ায় কর্তৃপক্ষ ফের ২’রা আগস্ট থেকে পুনরায় মঠ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।