দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতাল সূত্রে পাওয়ায় খবর অনুযায়ী অভিনেতার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল গতকাল, তাই দেওয়া হয়েছিল বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশন। কিন্তু কোনো উন্নতি লক্ষ্য করা যায় নি। সেকারণে অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে ইনটেনসিভ ভেন্টিলেশনে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা। ।
কোনও রোগীকে বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে তখনই রাখা হয় যখন শ্বাসকষ্ট সাধারণ। তবে সৌমিত্র বাবুর ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট হওয়াতে ইনটেনসিভ ভেন্টিলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে ফুসফুসে অক্সিজেন পাঠানো হলেও রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর হয় না। হাসপাতাল সূত্রে যেটুকু জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাতের দিকে প্রবীণ অভিনেতাকে সেই বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। তাঁকে পর্যবেক্ষণ রাখে ১২ জন চিকিৎসকের একটি বিশেষজ্ঞ দল। তখন ঠিক হয়েছিল, পরে প্রয়োজন হলে পুরোপুরি তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় সৌমিত্রবাবুকে ইনটেনসিভ ভেন্টিলেশনে (পুরোপুরি যন্ত্রনির্ভর) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আজ অর্থাত্ মঙ্গলবার সকালেই হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছিলো, প্রবীণ অভিনেতার সামান্য জ্বর আছে তবে উদ্বেগের মধ্যেই কিছুটা স্বস্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, সামগ্রিকভাবে সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়নি। কিন্তু ইনটেনসিভ ভেন্টিলেশনে থাকার কারণে সম্পুর্ণভাবে বিপদ মুক্ত নন তিনি।
মূলত: সৌমিত্রবাবুর ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের চিন্তায় রেখেছে ঘুসঘুসে জ্বর। যা এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায় নি। একইসঙ্গে তাঁর শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিক নয়, সেখানেও বৈষম্য দেখতে পাওয়া গিয়েছে। তবে তা ওষুধের মাধ্যমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যাবে বলে আশা করছেন চিকিৎসকরা। সোমবার তাঁর মস্তিষ্কের এমআরআই করা হয়েছে। তাতে আশঙ্কার কোনও খবর মেলেনি। মঙ্গলবারও তাঁর একাধিক পরীক্ষা করা হতে পারে বলে হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, গত ৫ অক্টোবর সৌমিত্রবাবুর করোনাভাইরাস পজিটিভ আসে। পরদিনই তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউতে ভরতি করা হয়। তারপর থেকেই সেই হাসপাতালেই আছেন উত্তম ও উত্তম পরবর্তী মঞ্চ ও চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি অভিনেতা। এরইমধ্যে শুক্রবার সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থার আশঙ্কাজনক অবনতি হয়। মূত্রথলিতেও সংক্রমণ হয়েছে বলে জানানো হয়। পরে দ্বিতীয় প্লাজমা থেরাপির পর তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়। তাঁর স্বাস্থ্যন্নতির কামনায় সকলেই প্রার্থনা করছেন।
আজ বিকেলে সামান্য হলেও উন্নতি হয়েছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার। মঙ্গলবার হাসপাতাল সূত্রে এমনই খবর মিলেছে। তারইমধ্যে প্রবীণ অভিনেতাকে দেখতে মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, সৌমিত্রবাবুর চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করছে রাজ্য। প্রাথমিকভাবে পরিবারের তরফে চিকিৎসার যে অর্থ দেওয়া হয়েছিল, তা ইতিমধ্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।