দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: শুক্রবার পুজো অনুদানকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের মামলায় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিলেন। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী দুর্গা পুজো উপলক্ষে রেজিস্টার পুজো কমিটি ও ক্লাব গুলোকে রাজ্যের দেওয়া ৫০,০০০ টাকা করে অনুদান কোথায় কত খরচ হল তার পাই পয়সার হিসাব দিতে হবে। পুজো কমিটিগুলিকে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে এই হিসাব দিতে হবে। এদিনের শুনানিতে একাধিক বিষয়ের তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেছেন বিচারপতি।
এদিন বিচারপতি পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশে দিয়েছেন যে তাদের মোট প্রাপ্যের ৭৫ শতাংশ টাকা মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে ব্যবহার করতে হবে। বাকি ২৫ শতাংশ ব্যবহার করতে হবে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে করোনা সচেতনতা প্রচারে। কোনও অনুষ্ঠান বা পুজো কমিটির কর্তাদের বিনোদনে ওই টাকা খরচ করা যাবে না।
এমন কী মাস্ক ও স্যানিটাইজার কেনার যাবতীয় নথি পেশ করতে হবে মহকুমাশাসক বা অতিরিক্ত জেলা শাসকের কাছে। সেই নথি অডিটর জেনারেলের অফিসে পাঠাবে রাজ্য প্রশাসন। গোটা প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ভাবে হয়েছে কি না তা জানিয়ে লক্ষ্মীপুজোর পর রাজ্য পুলিশের ডিজি হলফনামা জমা দেবেন হাইকোর্টে ।
এদিন শুনানিতে তাঁর পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘অনুদান ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছিলেন, আর সরকারের তরফে প্রকাশিত নির্দেশিকায় যা রয়েছে তাতে কোনও মিল নেই।’ এই খানে বলে রাখা ভালো যে, রাজ্যের পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান ঘোষণার সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এবছর পুজোয় বিজ্ঞাপণ পাচ্ছেন না পুজো উদ্যোক্তারা তাই এই অনুদানের রাশি বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার। যদিও নবান্ন থেকে জারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, ‘মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে’, এবং ‘করোনা সচেতনতা মূলক প্রচার’ চালাতেই এই টাকা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আজ শুনানিতে মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান ও নবান্ন থেকে জারি নির্দেশিকায় বিস্তর ফারাক দেখে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, ‘সমস্ত রাজনৈতিক দল মিলে আমলাতন্ত্রের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। নইলে এরকম হয় না। আমলারা রাজনীতিবিদদের থেকে বিচারবুদ্ধিতে অনেক এগিয়ে।’ এমনকি এদিনের এই নির্দেশ লিফলেট আকারে ছাপিয়ে পুজো কমিটিগুলিকে বিলি করার পরামর্শও দিয়েছেন বিচারপতি। বিশেষ করে পুলিশকে এই দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি।