দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: নিউ নর্ম্যালে নতুন সাক্ষর রাখল বারাসাত পাইওনীয়ার পার্ক পূজা কমিটি। করোনা আবহে আগেই ঠিক ছিল মন্ডপ করতে হবে তিনদিক খোলা সেই সাথে মন্ডপে ব্যবস্থা থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে স্যানিটাইজার ও মাস্ক এর। এর পাশাপাশি হাইকোর্ট জানিয়েছে ছোট মণ্ডপের ৫ মিটার আগে ঝুলিয়ে দিতে হবে নো-এন্ট্রি’র বোর্ড।
এই দুর্গা মন্ডপে গেলে দেখতে পাওয়া গেলো সরকারী বিধি-নিয়মের যতহযথ প্রয়োগ সেই সাথে সামাজিক চেতনা বৃদ্ধির আন্তরিক প্রয়াস। মন্ডপে ঢোকার মুখেই বসানো হয়েছে স্যানিটাইজেশন টানেল। আগত দর্শনার্থীদের সেই টানেলের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করিয়ে তবে মণ্ডপের ৫ মিটার দূরে যেতে দেওয়া হচ্ছে।
সোসাল ডিসট্যান্স বজায় রাখার বার্তা দিতে মণ্ডপের সামনেই চক দিয়ে গোল গোল বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের সেখানেই দাঁড়াতে অনুরোধ করছেন ক্লাবের সদস্যরা। সেই সাথে এবার মাস্ক এও এসেছে অভিনবত্ব। মাস্ক এই প্রিন্ট করা হয়েছে দুর্গা মূর্তি । মণ্ডপের একপাশেই স্যানিটাইজার ও ফ্রী মাস্ক ডিস্ট্রিবিউশন কাউন্টার করা হয়েছে। যেখানে আগত দর্শনার্থীদের হাতে ড্রপ ড্রপ স্যানিটাইজার দিচ্ছেন ক্লাব সদস্যদের একাংশ।
কিন্তু এ বছরের দুর্গাপুজোটা যে মানুষের ‘স্বাস্থ্যের ঝুঁকি’র সাথে জড়িয়ে সেটাই ক্লাবের সদস্যরা সকল কে মনে করিয়ে দিতে চাইছেন। যাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় এই পুজো সার্থক ও সর্বাঙ্গ সুন্দর হয়ে উঠেছে তাঁরা হলেন নিহার দাস, গৌতম চ্যাটার্জী, অমর বসাক, ডাঃ গৌতম সাহা, সুভাষ ভট্টাচাৰ্য ,সুব্রত মুখার্জী, সন্দীপ মুখার্জী ও রঞ্জিত কর্মকার। সলিল ঘোষ (নাড়ু), শুভায়ু দে (মিতুল), সুবীর মণ্ডল (ছোট বুবাই) ও প্রসূন বসু (টুবাই) এর অক্লান্ত ও আন্তরিক ব্যবস্থাপনাতে সম্ভব হয়েছে এই মহান কর্মযজ্ঞ। আর যার নাম না উল্লেখ করলেই নয় তিনি এই পুজো কমিটির প্রেসিডেন্ড মনোতোষ দাস( মিন্টু দা) ,যাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে পুজোর আয়োজনটি সম্পূর্ণ হয়েছে ।
নিউ নর্ম্যাল দুর্গা পুজোতে মন্ডপ ও দর্শনার্থীতে প্রভাব পড়লেও প্রভাব পড়েনি মায়ের মূর্তি ও সাবেকিয়ানায়। দেবীর মূর্তি ভাবনায় বাহারি রঙের প্রয়োগ খুব সহজেই শারদীয়া বাংলার মানুষের মনের কথাই বলে। সেই সাথে মায়ের মুখের আদলে ফুটে উঠেছে সারল্য ও অভয় দানের উজ্জ্বল আভা যা এক লহমাতে নিষ্পলক করছে আগত দর্শনার্থীদের। মণ্ডপের সজ্জাতে রয়েছে একটি বিশালকায় ঝারবাতি। যার রোশনাই দেখার জন্যে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা, এর সাথে রয়েছে মণ্ডপের সংলগ্ন অঞ্চলে একাধিক আলোক সজ্জা যা এক কথায় অনবদ্য।
এই শঙ্কার আবহাওয়াতে যেখানে উত্তর ২৪ পরগণাতে সংক্রমণের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে বারাসাত পাইওনীয়ার পার্ক এর এবারের পুজো ‘করোনা’ চেতনা বৃদ্ধিতে যে তাদের সামাজিক দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করছেন সে কথা বলাই বাহুল্য।