দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: লকডাউনে ট্রেন বন্ধ, চলছে কিছু স্পেশাল ট্রেন কিন্তু রেল মন্ত্রকের যা ইঙ্গিত তাতে এবার থেকে ট্রেনে চড়লে যথেষ্ট টাকা খরচ করতে হবে। দীর্ঘ দিনের সস্তার ভর্তুকি যুক্ত টিকিটের বিষয়টিও এ বার উঠে যেতে চলেছে। কারণ আগামী দিনে ভারতীয় রেলওয়ের নীতি নির্ধারণ ও পদক্ষেপে বাড়তে পারে ট্রেনের ভাড়া এমনই ইঙ্গিত দেখা দিচ্ছে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে যেভাবে ট্রেনের বেসরকারিকরণ ঘটছে তাতে ভাড়ার ক্ষেত্রে নানারকম ছাড় শীঘ্রই উঠে যেতে পারে। কারণ ট্রেনের পরিষেবা ভাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে ট্রেনে চড়ার টাকাও। এছাড়াও বিশ্বমানের প্ল্যাটফর্ম ও যাত্রাপূর্ব বিভিন্ন উচ্চমানের পরিষেবা পেতে প্ল্যাটফর্ম টিকিট ও পার্কিং টিকিটে চাপতে পারে নানান শুল্ক। এই শুল্ক চাপানোর ইঙ্গিত ইতিমধ্যে মিলেছে। কারণ বর্তমানে যে ফেস্টিভ্যাল স্পেশাল ট্রেনগুলি চালানো হচ্ছে, সেগুলির ভাড়া মূল ভাড়ার থেকে প্রায় ৩০% বেশি। এমনকি লকডাউনের আগে ভাড়ার ক্ষেত্রে যে ছাড়গুলি ছিল, ইতিমধ্যেই তার অনেকটাই তুলে দেওয়া হয়েছে।
এবার এক ঝলকে দেখা নেওয়া যাক কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মূল হয়ে উঠতে পারে-
বেসরকারী ট্রেন:
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, রেলে বেসরকারীকরণের পেছনে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের লক্ষ্য রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে রেল পরিবহনের ক্ষেত্রে একাধিক পরিবর্তন আসবে। এখন ট্রেনে যা ভাড়া, ভবিষ্যতে বেসরকারিকরণ হলে ট্রেনের ভাড়া বাড়তে পারে। শোনা গিয়েছে, পুরো রেল নেটওয়ার্কের শুধুমাত্র ১০৯টি রুটে প্রাথমিক ভাবে প্রাইভেট ট্রেন চলবে। এ ক্ষেত্রে আগামী দিনে ভাড়া বাড়ার সম্ভাবনা থাকছেই।
ইউজার চার্জ:
দিল্লি রেলওয়ে স্টেশনের প্রিলিমিনারি ইনফরমেশন মেমোরেন্ডাম ফর ডেভেলপমেন্টের তরফে যাত্রীদের উপর দু’ধরনের শুল্কের কথা বলা হয়েছে। একটি হল ইউজার চার্জ। অন্যটি হল ভিজিটরদের জন্য অর্থাত্ যাঁরা প্ল্যাটফর্ম টিকিট কাটছেন বা রেলওয়ে স্টেশনে গাড়ি পার্কিং করছেন। তবে এ নিয়ে কোনও পাকাপাকি সিদ্ধান্তের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিটি জায়গায় পার্কিং অত্যন্ত ব্যয়বহুল। কারণ ধীরে ধীরে জায়গার পরিমাণও কমছে। তাই শুল্ক চাপতেই পারে। অন্য দিকে, প্ল্যাটফর্ম টিকিট থেকে যে টাকা আয় হয়, তা রেলের সামগ্রিক আয়ের ক্ষেত্রে অত্যন্ত কম। তবে এই ক্ষেত্রগুলিতে যদি টাকার পরিমাণ বাড়ানো যায় বা শুল্কের উপর কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা হলে আয় বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে এই দিক থেকেও আগামী দিনে ভাড়া বাড়তে পারে।
রেলের আয়:
২০২০-২১ অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে ভারতীয় রেলের আয় খুব সঙ্কীর্ণ। আয় এর বিষয়ে রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ভি কে যাদব জানিয়েছেন, করোনা আর দীর্ঘ লকডাউনে ট্রেন পরিষবা বন্ধ থাকায় যথেষ্ট পরিমাণে আয় কমেছে রেলের। এ ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর থেকে একটু উন্নতি দেখা গিয়েছে। সাম্প্রতিক IR ডাটা অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের ১ তারিখ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত রেলের আয় ২,২৪৫.৩ কোটি টাকা। তবে অক্টোবরের পর থেকে এই চেহারায় একটু উন্নতি হতে শুরু করেছে। কিন্তু আগামীদিনে রেলের আয় বাড়াতে ও নানা পরিষেবা সচল করার লক্ষ্যে ট্রেনের ভাড়া বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ওপরে আলোচিত বিষয়গুলি সম্পুর্ণভাবেই সমীক্ষাকৃত সিদ্ধান্ত। যদিও রেলের শুল্ক এবং টিকিটের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সম্পুর্ণ ভাবেই রেল বোর্ড ও কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। সুতরাং এখানে আলোচিত বিষয় গুলি কী হতে পারে তার ইঙ্গিত, এটাই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়।