দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: নির্ভুল ভাবে ‘ভবিষ্যত্’ বলে দিতে পারতেন বলেই অনেকের দাবি। সেই সাথে নানান পাথর, শিকড়, পুজার্চনা, হোমযজ্ঞ এসব করেও ভক্তদের সঙ্কট দূর করতেন তিনি। কিন্তু নিজের বিপদের আঁচ টুকু গুণাক্ষরেও টের পাননি, ফলত: নিজেকেই আর বাঁচাতে পারলেন না কলকাতা তথা রাজ্যের জ্যোতিষমহলের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত শাস্ত্রী।
আজ রবিবার সকালে নিজের বাড়িতেই জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের পিছনে দায়ী কোনও দুর্ঘটনা নাকি অন্য কোনও রহস্য লুকিয়ে তা নিয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। জনবহুল এলাকায় এভাবে ঘরের মধ্যে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কেষ্টপুর এলাকার বারোয়ারিতলায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে রবিবার সকালে কেষ্টপুর বারোয়ারিতলায় জয়ন্ত শাস্ত্রীর তিনতলা বাড়িতে ওনার ঘরেই আগুন লাগে। বাড়ির যে অংশে আগুন লাগে সেই অংশটি জয়ন্ত শাস্ত্রীর। রবিবার সকালে হঠাত্ই সেখানে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই দ্রুত দমকলে খবর দেন। দমকলের দুটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য তার আগেই আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছিল।
সংকীর্ণ রাস্তায় হওয়া প্রথমে দমকলকে বেগ পেতে হয় আগুন নেভাতে। পরে দমকল কর্মীরা ওই বাড়িতে প্রবেশ করে এবং ওই ফ্ল্যাটের একটি ঘর থেকে জয়ন্ত শাস্ত্রীকে দগ্ধ ও অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করেন। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর দেহের ৫০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে গিয়েছিল।
এখন প্রশ্ন,আগুন লাগলো কীভাবে আর জয়ন্তবাবু কেন তা বুঝতে পারলেন না। আরও রহস্যজনক লেগেছে তাঁর চিত্কার চেঁচামেচি কেউ শুনতে পাননি। একজন মানুষ জীবন্ত দগ্ধ হওয়ার সময়ও কেন কোনও চিত্কার চেঁচামেচি করলেন না তা নিয়েই সব থেকে বেশি রহস্য তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে তিনি কী অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় ছিলেন যে আগুন তাঁর শরীরকে গ্রাস করলেও তিনি চিত্কার করার কোনও সুযোগ পাননি! নাকি গোটা ঘটনার পেছনে অন্য কোনও রহস্য!
দমকলের আধিকারিকেরা ইতিমধ্যেই ওই ফ্ল্যাটে আগুনের উত্স খুঁজে দেখছেন। আসছেন ফরেন্সিক আধিকারিকেরাও। তাঁরা মৃত জয়ন্ত শাস্ত্রী’র বাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আগুন লাগার সঠিক কারণ খতিয়ে দেখবেন।