দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: গতকাল রাতেই চিঠি গিয়েছে। সেখানে লোকাল ট্রেন চালানোর পাশাপাশি আরপিএফ এর অতি সক্রিয়তা নিয়ে কড়া ভাষায় রেলের সমালোচনাও হয়েছে। তবে রবিবার সকালেই মিলল সুস্পষ্ট আশ্বাস। সোমবার বিকালেই নবান্নে বসতে চলেছে বৈঠক। সেখানেই ঠিক হতে চলেছে এবার থেকে পূর্ব ও দক্ষিন পূর্ব রেলের লোকাল ট্রেনে রেলকর্মীরা ছাড়াও আমজনতা সফর করতে পারবেন কী না পারবেন না।
উল্লেখ্য, গতকাল রাতে হাওড়া স্টেশনে ঘটে যাওয়া বিক্ষোভের জেরে আরপিএফ কর্মীদের মারমুখী ভঙ্গিমায় কার্যত চতুর্দিক জুড়ে নিন্দা ছড়িয়েছে। কেন যাত্রী তথা বিক্ষোভকারীদের এভাবে মারা হল আর কার নির্দেশে লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটল তা খতিয়ে দেখতে তদন্তের দাবিও উঠেছে। এই রকম অবস্থায় রেলকে চিঠি তথা লোকাল ট্রেন চালানোর প্রস্তাব না দেওয়া ছাড়া রাজ্যের হাতে আর কোনও উপায় ছিল না। কারণ লোকাল ট্রেন চলাচলের ভাগ্য সম্পুর্ণভাবেই রাজ্যের হাতেই। এর আগে রেল সাফ জানিয়ে দিয়েছিলো, রাজ্য রেল চালানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত না দিলে লোকাল ট্রেন চলবে না।
নবান্ন সূত্রে খবর, আগামীকাল বিকাল ৫টায় রেল ও রাজ্যের বৈঠক বসতে চলেছে। রাজ্যের তরফে বৈঠকে মুখ্য ভূমিক পালন করবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দোপাধ্যায়। রেলের তরফে বৈঠকে হাজির থাকবেন থাকবেন পূর্ব ও দক্ষিণ পূর্ব রেলের আধিকারিকরা। বৈঠকে লোকাল ট্রেন নিয়ে জট কাটতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে রেলের তরফেও।
ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা, দুই রেলের এজিএম, চিফ অপারেশন ম্যানেজার, চিফ সিকিউরিটি কমিশনার সহ রেল আধিকারিকদের। অপরদিকে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরাও এই বৈঠকে থাকতে পারেন। সূত্রের খবর, মুম্বইয়ের ধাঁচে শুধু জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা, নাকি সব যাত্রীরাই লোকাল ট্রেনে উঠতে পারবেন মূলত: তা নিয়েই আলোচনা হবে। সেই সঙ্গে যাত্রী নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। কত সংখ্যক ট্রেন চালানো হবে তাও আলোচনায় উঠে আসবে। রেল সূত্রে খবর, তারা যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্যে।
তবে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হবে সকালে ও বিকালে কিছু বাড়তি লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য যেখানে আমজনতা চড়তে পারবে। কারন জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা বাদেও রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ লোকাল ট্রেনের ওপর চূড়ান্ত ভাবে নির্ভরশীল।
উল্লেখ্য, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ এখন কার্যত লোকাল ট্রেনে চাচড়ে কলকাতা যাতায়াত করতে পরছেন না। যার দরুণ তাঁরা কর্মস্থলে যেতেও পারছেন না। ফলে চূড়ান্ত আর্থিক অনিশ্চয়তা ও দৈন্যদশায় তাঁদের জীবন কাটছে। এমত অবস্থায় শুধুমাত্র রেলকর্মী ও জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষের লোকাল ট্রেনে চড়ার ছাড়পত্র দিলে আমজনতার সমস্যার কোনও সমাধান হবে না। আমজনতা যাতে মেট্রোর মতই লোকাল ট্রেনে চড়তে পারেন রাজ্যে এখন সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে রেলের সাথে বৈঠক করে।