দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: করোনাভাইরাসের আবহে শঙ্কার মেঘ কাটেনি। তাই এখনও খোলেনি স্কুল। সে কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পিছিয়ে যাবে বলেই বিভিন্ন মহলের ধারণা ছিল। কিন্তু শিক্ষা দপ্তর সূত্রে খবর, মোটামুটি ঠিক সময়েই হবে আগামী বছরের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। দিনক্ষণ এখনও স্পষ্ট না হলেও বিধানসভা নির্বাচনের আগেই দুটি পরীক্ষা মিটিয়ে নেবে সরকার এমনটাই সূত্রের খবর।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে এখনও স্কুল বন্ধ। বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থাকে হালে ফেরাতে পরিস্থিতি সামালে স্কুলগুলিতে শুরু হয়েছে অনলাইন ক্লাস। এমনকি রেডিয়োর মাধ্যমেও ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। তবে অভিভাবক, বিশেষজ্ঞ ও পড়ুয়াদের একাংশের বক্তব্য, সেগুলি শ্রেণিকক্ষে সরাসরি ক্লাসের বিকল্প নয়। তাছাড়া সকলের কাছে ইন্টারনেট সংযোগ বা স্মার্টফোন না থাকায় বহু পড়ুয়া ক্লাস করতে পারেনি। তাই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কবে হবে, কীভাবে হবে বা সিলেবাস কী হবে তা নিয়ে পড়ুয়ারা যেমন উদ্বিগ্ন, তেমনি চিন্তিত অভিভাবক ও শিক্ষকরাও।
এদিকে সোমবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ডিসেম্বরেই খুলতে চলেছে রাজ্যের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। সেক্ষেত্রে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সম্পূর্ণ কোভিড বিধি মানতে হবে। মাস্ক ব্যবহার এবং স্যানিটাইজারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক। প্রতিটি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় খোলার আগে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। ক্লাস চলার মাঝেও স্যানিটাইজ করতে হবে। তবে স্কুল খোলার বিষয়টি এখনো চিন্তাভাবনার স্তরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
অন্যদিকে শিক্ষা দফতর বা রাজ্য সরকারের তরফে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের দিনক্ষণ নিয়ে স্পষ্টভাবে এখনও কিছু না বললেও সূত্রের খবর, প্রতি বছরের মতো এবারও মোটামুটি একই সময়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
শিক্ষামন্ত্রী এও জানিয়েছেন, কবে থেকে এবং কীভাবে স্কুল খোলা হবে, তা নিয়ে কালীপুজোর পরে বৈঠকে বসবে সরকার। বৈঠকের আলোচনার বিষয়বস্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হবে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সব থেকে বেশি সমস্যা স্কুল স্তরে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে। চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ক্লাস করেছে মাত্র আড়াই মাস। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা একদিনও স্কুলে গিয়ে ক্লাস করার সুযোগই পায়নি। সেক্ষেত্রে এই দুই ক্লাসের সিলেবাস শেষ করে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা নিয়েই চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। তাই চেষ্টা করা হচ্ছে কালীপুজোর ছুটির পর অন্তত দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস চালু করতে। বাকি ক্লাসগুলিতে পঠনপাঠন আপাতত অনলাইনেই চলবে।
এই পরিস্থিতিতে আগামী বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দফতরের কাছে একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে শিক্ষকদের সংগঠন স্টেট ফোরাম অফ হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসস। বিধানসভা নির্বাচনের কথা বিবেচনা করে আগামী বছর মার্চে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে সংগঠন।
এক্ষেত্রে একই সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা একদিন অন্তর নেওয়া, পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আলাদা আলাদা কেন্দ্রে একই দিনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক নেওয়া যায় কি না, তা ভেবে দেখার জন্য ফোরামের তরফে শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে মোট সিলেবাসের ৭০ শতাংশ নিয়ে নতুন করে সিলেবাস ও নম্বর বিভাজন করে তা প্রকাশ করার পক্ষে সওয়াল করেছে এই শিক্ষক সংগঠন।