দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরোঃ রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত ফের একবার প্রকাশ্যে। এবার সরাসরি সাংবিধানিক প্রধানকে গার্ড অফ অনার না দেওয়ার অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল। আর এই অভিযোগের তীর তৃণমূল রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে। উল্লেখ্য, একমাস যাবত্ উত্তরবঙ্গ সফরে থাকা রাজ্যপাল মাননীয় জগদীপ ধনখড় সফর সুচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার কোচবিহারে যান। তবে সে জেলায় গিয়ে উপযুক্ত মর্যাদা পাননি বলেই অভিযোগ আনেন তিনি। তিনি জানান যে পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়নি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি একটি টুইট করেন। আর সেই টুইটের জবাবে মহুয়া মিত্র তাঁকে একটি পরামর্শ দিয়েছেন যা আরও একবার প্রকাশ্যে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত কে উসকে দিলো।
রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় আগেই টুইট করে জানিয়েছিলেন যে তিনি কোচবিহার সফরে যাচ্ছেন। তিনি বৃহস্পতিবার প্রথমে পঞ্চানন বর্মার মূর্তিতে মাল্যদান করেন; তারপর সেখান থেকে মদনমোহন মন্দিরে যান। পুজোও দেন। কোচবিহার রাজবাড়িও ঘুরে দেখার পর সার্কিট হাউসে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন। তবে এই কর্মসূচির মাঝে নিয়মানুযায়ী গার্ড অব অনার দেওয়া হয়নি বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন রাজ্যপাল। তিনি অনতিবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে এই প্রসঙ্গে টুইটও করেন। সেই টুইটে রাজ্যপাল রাজ্য পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রণাধীন বলে অভিযোগ করেন তাঁর এই কোচবিহার সফরে সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী। এছাড়াও বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকও ছিলেন।
উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গের মোট পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা গত ৯ নভেম্বরই রাজ্যপাল টুইট করেছিলেন। তবে আজ এই বৈঠকে সকলেই অনুপস্থিত ছিলেন। উপাচার্যদের এরকম অসাংবিধানিক আচরণের তীব্র বিরোধিতা করেন রাজ্যপাল। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই মর্মে চিঠিও পাঠিয়েছেন তিনি। ওই উপাচার্যদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন ধনখড়।
আর মাননীয় রাজ্যপালের এই টুইট কে ট্যাগ করে রাজ্যের কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র লেখেন ” কেউ কী এই সম্মানীয় ‘কাকু’ কে এটা বোঝাবেন যে ডিএম এবং এসপি এদের দুজনের আসলে নিজেদের কাজ রয়েছে এবং ছুটিতে থাকা ‘ওনাকে’ সম্মান জানানয়র থেকেও অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে তাদের। গার্ড অফ ওনার চাই? কিছু লেগো টয় সৈন্য কিনে নিন। “
মহুয়া মৈত্রের এই টুইট নিয়ে বিরোধীদের মন্তব্য, যে ভাষা মহুয়া মৈত্র ব্যবহার করেছেন তা থেকে সহজেই অনুমেয় যে সাংবিধানিক পদে থেকে ওপর সাংবিধানিক পদ মর্যাদার ব্যক্তিকে এই মূহুর্তে রাজ্যের রাজ্যের শাসকদল কোনোভাবেই আর সম্মান দিতে চান না। রাজ্যের প্রশাসনিক স্তর ক্রমে যে প্রহসনে পরিণত হচ্ছে সেটা ক্রমেই প্রকাশ্য। তবে তাঁদের দাবি, ভাষাগতভাবে সংযত না হতে পারলে সেটা মানুষের কাছে নেতিবাচক বার্তাই পৌঁছে দেয়। তবে মহুয়া মৈত্রের এই উক্তি নিয়ে নেটিজেন দের অনেকেরই বক্তব্য, প্রত্যেক রাজ্যের প্রশাসনকে সংবিধান অনুযায়ী ‘প্রটোকল’ মেনে চলা উচিত। আবার একদল বলেছেন রাজ্যপালের যদি রাজ্য রাজনীতি নিয়ে এতই মাথা ব্যথা তাহলে তিনি বিধানসভা নির্বাচনে কেনো ‘টিকিট’ নিয়ে দাঁড়াচ্ছেন না!