দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: দীপাবলি’র আগের দিন কাশ্মীরে পাক সেনার যুদ্ধবিরতি উপেক্ষা করে গোলাবর্ষণে শহিদ হয়েছিলেন নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা সুবোধ ঘোষ। রবিবার বিকেলে চণ্ডীগড় থেকে বিশেষ বিমানে বিকেল চারটে নাগাদ পানাগড়ে এসে পৌঁছয় জওয়ান সুবোধ ঘোষের কফিনন্দি দেহ। সেখান থেকে সড়কপথে তাঁর দেহ নিয়ে নদিয়ার রঘুনাথপুরের দিকে রওনা দেয় সেনাবাহিনী। তাঁর মরদেহ গতকাল রাত ১১টার পর এসে পৌঁছয় রঘুনাথপুরের গ্রামের বাড়িতে।
গত রাতে গ্রামে যখন সেনার ট্রাক ঢুকেছে, সেখানে উপচে পড়েছে মানুষের ভিড়। সকলেই চাইছিলেন ঘরের ছেলেকে চোখের জলে শেষ বিদায় জানাতে। দেশের জন্য লড়াই করে শহীদ হয়েছে সুবোধ। তবে এত অল্প বয়সে চলে যাওয়াটাই মেনে নিতে পারছে না কেউ।
গতকাল সকাল থেকেই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি ছিল রঘুনাথপুর গ্রামীণ এলাকা। যে স্কুলে সুবোধ পড়েছিল সেই নিমতলা বিদ্যানিকেতনের ফুটবল খেলার মাঠে অস্থায়ী মঞ্চতে ফুল, মালা, প্রদীপ দিয়ে এলাকার বাসিন্দারা শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।
ওই মাঠেই জওয়ানরা শহীদ সুবোধকে গান স্যালুট দিয়ে বিদায় জানিয়েছে। ‘ভারত মাতা কি জয়’, ‘সুবোধ ঘোষ অমর রহে’ স্লোগানের মাঝেই কফিনের উপর কান্নায় ভেঙে পড়েন সুবোধের স্ত্রী। রঘুনাথপুরে শহিদ জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির ছিলেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার এবং কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।


উল্লেখ্য সুবোধের একটি তিন মাসের কন্যা সন্তান রয়েছে। এখনো মেয়েকে নিজের হাতে কলেও তুলে নিতে পারে নি সে। সেই বীরসেনানিকে চোখের জলে শেষ বিদায় জানান পরিবারের বাকিরাও। শহিদ সুবোধ ঘোষের বাবা বলেন, “ছেলে দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে। গর্ব হচ্ছে ঠিকই। তবে সন্তান চলে যাওয়াটাও বড় যন্ত্রণার। কত কষ্ট করে ওকে বড় করেছি। চাকরি পেয়ে সব দায়িত্ব একার কাঁধে নিয়েছিল। ছেলেটাকে আর দেখতে পাব না।”
প্রসঙ্গত, পানাগড়ে শহিদ জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানান ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বায়ুসেনার অফিসাররা। অনুষ্ঠানে ছিলেন দুর্গাপুর ডিভিশনের পুলিস কর্তারাও। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার সুখেশ জৈন, ডিসি অভিষেক গুপ্তা, কাঁকসার এসিপি-সহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন শহিদ জওয়ানকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। শোকসভাতে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ অর্জুন সিং।