দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বর্তমানে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনার মূল কেন্দ্র বিন্দু পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি দলবদল করবেন, নাকি তিনি শাসকদলেই থাকবেন না নতুন দল গঠন করতে চলেছেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই বাংলার বিভিন্ন মহলের জল্পনা তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই শুভেন্দু বাবু জানিয়েছেন আগামী কাল অর্থাত্ ১৯ শে নভেম্বর তিনি রামনগরের সভাতেই সব স্পষ্ট করবেন। আর এরই মধ্যে বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুকের নিমতৌড়িতে নিখিল ভারত সমবায় সপ্তাহ উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সেই মেগা শোএর স্টেজ রিহার্সাল সেরে নিলেন।
আজ ওই মঞ্চ থেকে কেন্দ্রে পৃথক সমবায় দপ্তর করার দাবি জানালেন তিনি। তিনি বলেন, “রাজ্যে রাজ্যে আমাদের সমবায়ের দপ্তর আছে। আমরা চাই কেন্দ্রে পৃথক সমবায় দপ্তর করা হোক। আমরা চাই পঞ্চায়েত- পুরসভার মাধ্যমে এসএইচজি গ্রুপকে যে বেনিফিট দেওয়া হয় আমাদের সমিতির মাধ্যমে সংবাদ একই জায়গায় রেজিস্ট্রিকৃত হওয়া সত্বেও আমাদের এসএইচজি গ্রুপের মা-বোনদের সমান গুরুত্ব মর্যাদা দেওয়া হোক এটা আমাদের অনেক দিনের দাবী।”
এদিন তিনি আরও বলেন, “১৪ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর সমবায় সপ্তাহ উদযাপিত হয়। আমরা যারা সমবায় আন্দোলনের তৃণমূল স্তরের কর্মী, সমবায় আন্দোলন করি আমরা এই সপ্তাহটি সর্বত্র সমবায়ীদের যুক্ত করে এই বিকল্প অর্থনীতি হৃষ্ট- পুষ্ট- বলিষ্ঠ করার কাজ করি”। পাশাপাশি তিনি নিষ্ক্রিয় সমিতিগুলিকে সক্রিয় করারও কথা বলেন। বুধবার শুভেন্দু অধিকারির এই বক্তব্য থেকেই রাজ্য রাজনীতিতে নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে।
তবে আজকের বক্তব্যে শুভেন্দু বাবু যেভাবে নিজেকে তৃণমূলের কর্মী হিসেবে নিজেকে দাবি করলেন তাতে রাজ্য রাজনীতির নয়া মোড় বলা চলে। এদিন শুভেন্দু অধিকারি মঞ্চ থেকে আরও বলেন যে, “বৈদ্যনাথন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করে সমবায় সংবিধানের স্বীকৃত হয়েছে। তাই যথাসময়ে নির্বাচন, যথা সময়ে সাধারণ সভা, যথাসময়ে অডিট এবং অডিট নিয়ে আলোচনা করা সমবায়ের মূল লক্ষ্য।
আমরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগাবো। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে চারণকবি মুকুন্দদাস, কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধী সমবায়ের কথা বলে গেছেন। সেই সমবায়কে হৃস্ট- পুষ্ট- বলিষ্ঠ করতে হবে। এটাই হোক আজকের দিনের শপথ।” এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তমলুক ঘাটাল সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক লিমিটেডের সভাপতি গোপাল চন্দ্র মাইতি, সহ- সভাপতি মেঘনাদ পাল, সম্পাদক কৌশিক কুলভী সহ অন্যান্যরা। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে সমগ্র অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয় এদিন। এদিন শুভেন্দু বাবু এও বলেন যে “আমরা সমবায় এ নির্বাচিত হয়ে আসি, মনোনীত হয়ে নয়”। তাঁর এই উক্তি আজ আবার নতুন বিতর্কের সূত্রপাত করেছে।
উল্লেখ্য, পুজোর আগে থেকেই শুভেন্দুবাবু দলের থেকে দূরত্ব বাড়াতে শুরু করেন; রহস্য জনক ভাবেই তাঁর নামে পোস্টার পড়তে থাকে। যেখানে দাদা আমরা তোমার পাশে আছি, আমরা দাদার অনুগামী ইত্যাদি ইত্যাডি লেখা লিখতে দেখা যায়। এমন কি এখনো পুরো পূর্ব মেদিনীপুর জুড়েই শুভেন্দু বাবুর ছবি ও নামাঙ্কিত পোস্টার, ব্যানার ঝুলতে দেখা যায়। এমনকি তাঁর ব্যানারে দলনেত্রীর ছবি নেই। ব্যানারে লেখা জনসেবক শুভেন্দু অধিকারী। আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে। অন্যদিকে আজ তৃণমূলের দলের তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে শুভেন্দু অধিকারী তাদের দলের সদস্য। তাঁর কিছু দাবি আছে যেগুলো খতিয়ে দেখছে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, প্রশান্ত কিশোরের কারণেই শুভেন্দুর এই বেঁকে বসা। তিনি চাইছেন দলে তাঁর গুরুত্ব বাড়ুক সেই সাথে দলনেত্রী সরাসরি তাঁর সাথে কথা বলুন এবং যে যে জেলার সংঘটন তিনি পরিচালনা করতেন সেগুলো তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। তবে শুধু শুভেন্দুই নয়। ইতিমধ্যে কোচবিহার ও সিতাই এর বিধায়ক ও অন্য সুরে গান গাইছেন যা এই মূহুর্তে রাজ্য সরকারের পক্ষে মোটেই সুখকর নয়।