দ্য ক্যালকাটা মিরর ব্যুরো: বাজারে আলুর দাম উর্ধমুখী। দামের যা গ্রাফ তাতে খুব শিগগির দাম ৫০ টাকা প্রতি কেজিতে গিয়ে ঠেকবে। ইতিমধ্যে পাইকারি বাজারে জ্যোতি আলু ১৮৫০ টাকা বস্তা দর, পোখরাজ ১৭৭০ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু ১৯৫০ টাকা। খুচরো বিক্রেতারা ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা দরে আলু বিক্রি করেও তেমন লাভবান হচ্ছে না। কারণ দাম বেশি হওয়ার জন্য আর্থিক লগ্নি বেড়ে যাচ্ছে খুচরো ব্যবসায়ীদের। সেই তুলনায় লাভ কম। এছাড়া প্রতি বস্তাতে কাটা আলু ও নষ্ট আলুতো থাকছেই।
এবার দেখে নেওয়া যাক আলুর এত দামের কারণ কী। তদন্তে নেমে দেখতে পাওয়া গেল পোস্তা বাজারের পাইকারি বিক্রেতা দের মতে প্রতি বছর আলু চাষের জন্য রাজ্যের বাইরের বীজ আলু আসত। লকডাউন ও পাঞ্জাবে রেল বন্ধ থাকার জন্যে এই বছর সেই বীজ আলুর দাম ৮৫০০ – ১০০০০ টাকা কুইন্টাল গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে খুচরো কেজি প্রতি দাম পড়ছে ৮৫-১০০ টাকা। বীজ আলুর দাম এত বেশি হওয়ার জন্য, চাষীরা তাদের নিজের গচ্ছিত আলু – বীজ আলু হিসাবে ব্যবহার করছেন। তাই বাজারে আলু অভাব পড়ার এটি একটি কারণ। তাই নতুন আলু না ওঠা পর্যন্ত এই অভাব থাকবে।
গতকাল বিজেপির রাজ্য সভাপতি দীলিপ ঘোষ অভিযোগ করেন যে,’ যে আলু চাষীরা বিক্রি করেছেন ৫ টাকা কেজি দরে, সেই আলুই আবার চাষীরা আবার কিনছে ৪০ টাকা কেজি দরে’। তিনি এও বলেন ‘ দিদির ভাইয়েরা আলুর বন্ড কিনে গুছিয়ে রেখেছে। তারা না ছাড়ার ফলে আলুর দাম বৃদ্ধি হচ্ছে ‘।
দিলীপবাবুর সন্দেহ যে অমূলক নয় সেটা জানা গিয়েছে বিশেষ সূত্রে। সিঙ্গুর,তারকেশ্বর,আরাম বাগ ইত্যাদি বিস্তীর্ণ এলাকাতে সমাজের কিছু আর্থিক প্রভাবশালী মানুষ রয়েছেন ,যারা আলুর বন্ড কিনে ,আটকে রেখেছে। তারা ওই বন্ড ছাড়ছেন না যার ফলে হিম ঘরে আলু আটকে রয়েছে। আর স্বাভাবিক কারণে আলুর দাম বেড়ে রয়েছে বাজারে।
এই আলুর বন্ড আটকে রাখার বিষয়ে রাজ্যের টাস্ক ফোর্সের বক্তব্য,- কেন্দ্র অত্যাবশকীয় পণ্য আইন থেকে,আলু, পেয়াঁজ এর মত দ্রব্য বাদ দিয়েছে। যার ফলে মজুতের ঊর্ধ্ব সীমা সম্পর্কে কোনো বিধি নিষেধ নেই। রাজ্য সরকার তাই এই সব প্রভাবশালির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছে না। এক কথায় রাজ্য কেন্দ্রের ওপরে দায়ভার চাপিয়ে দিচ্ছে।
টাস্ক ফোর্সের মতে “আলু প্রতিদিন ভিন রাজ্যে রপ্তানি হচ্ছে। উত্তর প্রদেশ, দিল্লিতে আলু ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যার ফলে বেশ কিছু আলু ব্যবসায়ীরা ভিন রাজ্যে বেশি দামে আলু বিক্রি করে দিচ্ছে।” ফলে এই মূহুর্তে আলুর দাম কমার নয় বরং কদিন বাদে আলু ৭০-৮০ থেকে ১০০ ছুঁয়ে গেলেও অস্বাভাবিক কিছু বিষয় হবে না। তবে রাজ্য-কেন্দ্র মিলে এই বিষয়টি না মেটালে, লালু বিহীন বিহারের মতন আলু বিহীন বঙ্গে থাকতে হবে বাঙালি কে।